‘গুম হওয়া’ রহমত উল্লাহকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনদের নিয়ে গঠিত সংগঠন ‘মায়ের ডাক’।
সোমবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
‘মায়ের ডাক’-এর আয়োজনে গুম হওয়া রহমত উল্লাহকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে রহমত উল্লাহর মা বলেন, প্রায় পাঁচ মাস ধরে ২০ বছর বয়সী মোহাম্মদ রহমত উল্লাহর কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না তিনি। তার অভিযোগ, র্যাবের পোশাক এবং সাদা পোশাকের একটি দল তার ছেলেকে তুলে নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, তার ছেলে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। কারও সঙ্গে কোনো বিবাদও নেই। কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘কিছুই আমি জানি না। কোনো খোঁজ দেয় না।’
রহমত উল্লাহর বোন রাজিয়া আক্তার বলেন, তাদের বাড়ি মানিকগঞ্জের ধামরাই উপজেলার গাংগুটিয়া ইউনিয়নের বড়নালাই গ্রামে। রহমত উল্লাহ বৈদ্যুতিক মিস্ত্রির কাজ করতেন। তাদের বাবা অনেক আগেই মারা গেছেন। তারা তিন ভাইবোন।
রাজিয়ার অভিযোগ, ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট দিবাগত রাত প্রায় ১২টার দিকে র্যাবের পোশাক এবং সাদা পোশাকের একটি দল তাদের বাড়িতে যায়। রহমত উল্লাহর জ্বর থাকায় তিনি মায়ের পাশে শুয়ে ছিলেন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা বাড়ি এলে তার মা দরজা খুলে দেন। এ সময় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কয়েকজন সদস্য ঘরের ভেতরে ঢুকে রহমত উল্লাহকে জোর করে ধরে নিয়ে যায়।
রাজিয়া আরও অভিযোগ করেন, পরদিন ৩০ আগস্ট রহমত উল্লাহর খোঁজে তারা মানিকগঞ্জ র্যাব ক্যাম্পে গেলে ধামরাই থানায় খোঁজ নিতে বলা হয়। কিন্তু ধামরাই থানা কোনো তথ্য দেয়নি। নবীনগর র্যাব ক্যাম্প ও সাভার গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়েও তারা খোঁজ নিতে যান। ধামরাই থানা প্রথমে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গেলে নেয়নি অভিযোগ করে পরিবার জানান, স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর গত ৭ অক্টোবর জিডি নেওয়া হয়।
এ সময় গুম হওয়া লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা বিএনপির (পূর্ব) সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ওমর ফারুকের ছেলে ইমন ফারুক, বিএনপি নেতা মো. কাওসার হোসেনের মেয়ে লামিয়া মিম এবং নিহত ছাত্রদল নেতা মাহবুবুর রহমান ওরফে বাপ্পীর বোন ঝুমুর আক্তার বক্তব্য দেন।
মায়ের ডাকের মঞ্জুর হোসেন ঈসার সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম এবং সংহতি প্রকাশ করেন মনোচিকিৎসক আবদুল হক পিনাক।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত