বর্ষীয়ান বাম রাজনীতিক, তাত্ত্বিক, লেখক-গবেষক ও বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর বলেছেন, ৫৪ সালে মুসলিম লীগের মতো এখন আওয়ামী লীগও ধসে গেছে। আওয়ামী লীগের সব সংগঠন ধসে গেছে। কেউ যদি মনে করে যে আওয়ামী লীগ আবার ফিরে আসবে- সেটা একেবারেই অসম্ভব ব্যাপার। ১৯৫৪ সালে মুসলিম লীগ যেভাবে শেষ হয়ে গিয়েছিল, এখন আওয়ামী লীগও সেভাবে শেষ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান ছিল বায়ান্ন সাল থেকে এখন পর্যন্ত সংঘটিত অভ্যুত্থানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ব্যাপক, গভীর ও আক্রমণাত্মক। এর কারণ, গত সাড়ে ১৫ বছরে জনগণের ওপর এমন অত্যাচার, নির্যাতন করেছে, যার কোনো পূর্ব-দৃষ্টান্ত নেই। নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে। মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ছিল, কিন্তু বিক্ষোভের সুযোগ ছিল না।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান : জনগণের হাতে ক্ষমতা চাই, জনগণের সরকার-সংবিধান-রাষ্ট্র চাই’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। সভার আয়োজন করে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল।
বদরুদ্দিন উমর আরও বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আসা পরিবর্তনকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলা হচ্ছে। এটা একটা আজগুবি ব্যাপার। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ রাষ্ট্র তৈরি হলো, স্বাধীন হলাম আমরা। সেই অর্থে তো এটা দ্বিতীয় স্বাধীনতা নয়। এই গণ-অভ্যুত্থানের ফলে তো এখানে নতুন রাষ্ট্র তৈরি হয়নি।
তিনি বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার উড়ে এসে জুড়ে বসেনি। হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার উৎখাত হওয়ার পর একটা শূন্যতার সৃষ্টি হলো। এই শূন্যতা পূরণ করা দরকার ছিল। ছাত্র ও অন্যরা মিলে যদি এই সরকার দাঁড় না করাত, একমাত্র বিকল্প ছিল সামরিক সরকার। যারা এই সরকারের বিরুদ্ধে এখন বলছেন, তারা কি বলবেন এর চেয়ে সামরিক সরকার ভালো ছিল? বিদ্যমান সংবিধান ফেলে দিয়ে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে। এমন একটা সংবিধান করতে হবে যা বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জ্যপূর্ণ।
বিডি-প্রতিদিন/শআ