মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা, উন্নয়ন এবং পরিসংখ্যান) মোহাম্মদ মাহাবুবুর রহমান ভূইয়া বলেছেন, আইন করে নয়, পারিবারিক সহিংসতা দূর করতে মনোসামাজিক কাউন্সিলিং করতে হবে। জেল জরিমানা করে পারিবারিক সহিংসতা বন্ধ করা যায় না।
মঙ্গলবার বরিশাল জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন ২০১০ হালনাগাদকরণ বিষয়ক অংশীজনদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, আমাদের প্রাচীন সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম পরিবার। পরিবারে আমাদের জন্ম, বেড়ে ওঠা এবং পরিবারেই আমাদের মৃত্যু। সামাজিকীকরণের প্রধান মাধ্যম পরিবার। পরিবারের বাইরে আমরা কোনো কিছু চিন্তা করতে পারি না। কিন্তু সেই পরিবারে যখন সহিংস আচরণ ঘটে তখন শুধু পরিবারই নয়, সমাজও অস্থির হয়ে ওঠে। রাষ্ট্রও কোনোভাবে বাদ যায় না। এর মাধ্যমে জন্ম নিতে পারে আরও একটি অনাকাঙ্খিত সহিংস আচরণের। পরিবারে আর্থিক অনটন, মান-অভিমান, রাগ, ক্ষোভ অনেক কিছু থাকবে। কিন্তু সেগুলোকে মোকাবেলা ও মিটমাট করার মধ্য দিয়েই পরিবারে শান্তি বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. তাছলিমা ইয়াসমিন অনুষ্ঠানে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করেন।
জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মেহেরুন নাহার মুন্নি এসময় শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন।
বরিশাল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জেলা লিগ্যাল এ্যাইড কর্মকর্তা ও সিনিয়র সহকারী জজ রেজোয়ানা আফরিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) লুসি কান্ত হাজংসহ বিভিন্ন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, সরকারি পিপি, ইউএনএফপিএ এর প্রতিনিধি, নারী ও শিশু জজ কোর্টের আইনজীবী, সরকারি কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় পরামর্শ দেওয়া হয় উপজেলা পর্যায়ে ভিক্টিম সেন্টার থাকা প্রয়োজন। সেখানে আলাদা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তা রাখা উচিত। মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার পক্ষে ভিক্টিম সেন্টারের দায়িত্ব পালন করা কষ্টকর।
সামাজিক প্রতিরোধের মাধ্যমে পারিবারিক সুরক্ষা প্রয়োজন তুলে ধরে বক্তারা আরও বলেন, মনোমালিন্য ও দ্বন্দ্ব থাকতেই পারে। এগুলো না থাকলে পরিবার ও সমাজ পরিশীলিত হয় না। কিন্তু তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। সেজন্য লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা বা গ্রাম আদালতের মাধ্যমে নিরসন করা সম্ভব। মামলা হামলা ও জরিমানায় সংসার ভাঙ্গার সম্ভাবনা থাকে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল