নির্ধারিত সময়ের তিন দিন আগেই গাজীপুর সিটি করপোরেশনের টিএনজেড গ্রুপের পাঁচটি কারখানার ৩ হাজার ৬২০ জন শ্রমিক ও ১২০ জন স্টাফের এক মাসের বকেয়া পরিশোধ করেছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তাদের অ্যাকাউন্টে বেতনের টাকা দেওয়া হয়। এতে স্বস্তি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
শুক্রবার বিকেলে গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মোহাম্মদ ইব্রাহীম খান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আমরা শুনেছি কারখানা কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট তারিখের তিন দিন আগেই বেতন দেয়া শুরু করেছেন।
বেতন পেয়ে কারখানার শ্রমিক শহিদুল ইসলাম বলেন, আগামী রবিবারের মধ্যে বেতন দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু আমরা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিকাশ অ্যাকাউন্টে বেতন পেয়ে গেছি। আমাদের মালিকপক্ষ কথা দিয়ে কথা রেখেছেন। আমরা সবাই খুশি।
অপরদিকে, শনিবার থেকে কারখানাগুলো পুনরায় চালু হবে বলে জানিয়েছেন টিএনজেড গ্রুপের চেয়ারম্যান হেদায়াতুল হক। তিনি আশা করছেন, এদিন শ্রমিকরা কাজে যোগ দিবে এবং কারখানার উৎপাদনে অংশ নিয়ে মালিকপক্ষের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সহযোগিতা করবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টিএনজেড গ্রুপের গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মোগরখাল এলাকায় পাঁচটি কারখানা রয়েছে। এসব কারখানার মধ্যে টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেডে শ্রমিকের সংখ্যা দুই হাজার ৮০০, বেসিক ক্লথিং লিমিটেডে ৪২০ এবং অ্যাপারেলস আর্ট লিমিটেডে ৪০০ শ্রমিক রয়েছেন। তাদের সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর মাসের বেতন বকেয়া ছিল। এছাড়া এক্সপো কার্টনে ৪০ জন এবং এমএনএস ইয়ার্ন ডায়িং কারখানায় ৮০ জন স্টাফ রয়েছেন। তাদের গত দুই মাসের বেতন ও সার্ভিস বেনিফিট বকেয়া ছিল।
উল্লেখ্য, গত ৯ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৯টা থেকে টিএনজেড গ্রুপের পাঁচটি কারখানার প্রায় ২ হাজার শ্রমিক দুই মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মালেকের বাড়ি এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ভয়াবহ যানজট ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়েন এবং পণ্য পরিবহন বাধাগ্রস্ত হয়। টানা তিন দিনের বিক্ষোভের পর শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম শফিকুজ্জামান ঘোষণা দেন যে, শ্রমিকদের বেতন পরিশোধে উদ্যোগ নেবে সরকার। গত সোমবার রাতে শ্রম ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে টিএনজেড গ্রুপের ৩১ শ্রমিক প্রতিনিধি, বিজিএমইএ এবং শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সমঝোতা চুক্তি সই হয়। এতে সিদ্ধান্ত হয়, ১৭ নভেম্বরের মধ্যে শ্রমিকদের সেপ্টেম্বর মাসের এবং ৩০ নভেম্বর অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে। গ্রুপের কারখানাগুলো কর্তৃপক্ষ দ্রুত খুলে দেবে। এছাড়া ৩০ নভেম্বরের আগে কেউ যদি আবার সড়ক অবরোধ করেন, তাহলে টাকা পরিশোধ করা হবে না। পরে শ্রমিকেরা অবরোধ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলে সোমবার (১১ নভেম্বর) রাত ১০টার পর থেকে ওই সড়কে যান চলাচল শুরু হয়।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত