রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় তিস্তার শাখা মানাস নদীর ওপর ১০ বছর আগে ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল একটি সেতু। নির্মাণের তিন বছরের মাথায় সেতুর সংযোগ সড়কের দুই পাড় ভেঙে যায়। এরপর কাঠের সাহায্যে পারাপারের ব্যবস্থা করা হয়।
সম্প্রতি বন্যায় পানির তোড়ে কাঠের অংশটিও ভেঙে যায়। ফলে সেতুটি দিয়ে পারাপার বন্ধ হয়ে যায়। মানুষজন এখন নৌকা দিয়ে ওই স্থান পার হচ্ছেন। এতে স্থানীয়দের আর্থিক ব্যয়ের পাশাপাশি সময়ের অপচয় হচ্ছে। তবে উপজেলা প্রশাসন বলছে, সেতুর দুই পাশ কাঠ দিয়ে মেরামত করে দেওয়া হয়েছে।
কাউনিয়া উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে সরকার ও ইউএসএআইডি’র অর্থায়নে বালাপাড়া ইউনিয়নের মোলভী বাজার এলাকায় তিস্তার শাখা মানস নদীর ওপর ৩৭ লাখ ২৪ হাজার ১৮৩ টাকা ব্যয়ে ১৭ মিটার দৈর্ঘ্যর একটি বক্স সেতু নির্মাণ করা হয়। এতে ওই গ্রামসহ আশপাশের ১০ গ্রামের মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগ লাঘব হয়। কিন্তু সেতু নির্মাণের তিন বছর পরেই শুরু হয় দুর্ভোগ। বন্যায় সেতুটি হেলে পড়ে এবং দুই পাড়ের সংযোগ সড়ক ভেঙে যায়। একপর্যায়ে স্থানীয়রা ক্ষতিগ্রস্ত ওই সেতুর দুই পাড়ে অস্থায়ীভাবে সাঁকো নির্মাণ করেন। সম্প্রতি বন্যায় পানির স্রোতে সাঁকোসহ সেতুটির সংযোগ সড়ক ভেঙে যায়।
স্থানীয়রা জানান, গত সাত বছর সংযোগ সড়ক নির্মাণে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় সেতু পার হতে বাঁশ ও কাঠের সাঁকোটিই ছিল পারাপারের অন্যতম মাধ্যম। সেটিও এবার ধসে গেছে পানির স্রোতে। সেতুটি দিয়ে স্থানীয় গোপীডাঙ্গা, আরাজী খোর্দ্দ ভূতছাড়া, মৌলভী বাজারসহ অন্তত ১০ গ্রামের মানুষের যাতায়াত।
এ ছাড়া লালমনিরহাটের রাজপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াতের ভরসা এই সেতু। এর দুই প্রান্তের মাটি ধসে পড়ায় কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ কয়েকহাজার মানুষকে প্রতিদিন টাকা দিয়ে নৌকায় ঝুঁকি নিয়েই পারাপার করতে হচ্ছে।
স্থানীয়দের দাবি, সেতুর দুই পাশে ধসে যাওয়া মাটির সংযোগ সড়কটি দ্রুত সংস্কার করে মূল সেতুর সঙ্গে চলাচল উপযোগী করা হোক।
বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনছার আলী বলেন, দুই পাড়ের লোকজনের ভোগান্তি লাগবে জরুরি ভিত্তিতে সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কার করা প্রয়োজন। কিন্তু সেটি ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে সম্ভব নয়। উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসন উদ্যোগ নিলে মানুষের কষ্ট লাঘব হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহিদুল হক বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে কাঠের সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে। সংযোগ সড়ক ও সেতু মেরামতে প্রকল্প পাঠানো হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই