রাজধানীর দক্ষিণ যাত্রাবাড়ীতে দীর্ঘদিনের চলমান তীব্র গ্যাস সংকটে অতিষ্ঠ হয়ে এর প্রতিবাদে এক মানববন্ধন ও সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেছে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। আজ সোমবার শহীদ ফারুক সড়কে সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে এ কর্মসূচি পালিত হয়। সকাল থেকেই মানববন্ধনে অংশ নেওয়ার জন্য আশপাশের বাসিন্দারা সমবেত হতে থাকেন। শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে গৃহিণী, চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীসহ নানা পেশার লোকজন এ কর্মসূচিতে অংশ নেন।
এসময় স্বাগত বক্তব্য রাখেন আদর্শ পঞ্চায়েত সর্দার আলহাজ হাফেজ মো. তাজউদ্দিন। গ্যাসের সংকট ও তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে বিভিন্ন উপাত্ত উপস্থাপন করেন তিনি। তুলে ধরেন নানা সংকটের বাস্তবচিত্র।
এ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নবীউল্লাহ নবী বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি। এরপর ফ্যাসিস্টদের বিদায় হলেও গ্যাস সংকট কাটেনি। বরং দিনের পর দিন ভোগান্তি ও আর্থিক ক্ষতির শিকার হতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। এতে এখানকার বাসিন্দাদের নাগরিক সুবিধা ব্যাহত হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতার কারণে গ্যাস না পেয়েও প্রতি মাসের বিল গুণতে হচ্ছে। জনগণের এই ভোগান্তি কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার নয়, কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই এর সমাধানে ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে আগামীতে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে চলমান এই গ্যাস–সংকটের কারণে এলাকার প্রতিটি পরিবারকেই ভুগতে হচ্ছে। গ্যাস সরবরাহ না থাকায় বাসাবাড়িতে চুলা জ্বলছে না, যার ফলে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। গ্যাস না থাকায় এলাকাবাসীকে প্রায়ই শুকনো খাবার ও হোটেল-রেস্তোরাঁ থেকে খাবার কিনে খেতে হচ্ছে। অনতিবিলম্বে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নিলে আমরা এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে তিতাস গ্যাসের অফিস ঘেরাও কর্মসূচি দেব।
এদিন কর্মসূচিতে সভাপতির বক্তব্যে দক্ষিণ যাত্রাবাড়ীর ১নং পঞ্চায়েতের বড় সর্দার এসএম আনোয়ার আইয়ুব বলেন, গ্যাস সংকটের কারণে ঝুঁকি নিয়ে বাসাবাড়ির ছাদে, বারান্দায়, কক্ষের ভেতর কেউ কেউ লাকড়ির চুলা, আবার কারো কারো সিলিন্ডার গ্যাসে রান্না করতে হচ্ছে। তাছাড়া এ এলাকার গ্যাস পাইপলাইন অনেক বছরের পুরোনো, সেকারণেও ঝুঁকির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন অন্তর্গত ৫০নং ওয়ার্ডের শহীদ ফারুক সড়ক এর খানকা শরীফ মসজিদ থেকে পশ্চিমে ওয়াসা রোড পর্যন্ত, দক্ষিণ পাশের সুরুজ নগর, জেলেপাড়া মন্দির গলির জান্নাতুল উম্মাহ মাদ্রাসা এলাকা, ফুলকুঁড়ি আইডিয়াল হাই স্কুল এলাকা, চন্দনকোঠা নতুন কুঁড়ি হাই স্কুল এলাকা, চানতাঁরা মসজিদের চারপাশ, নবী নগর ঈদগাহ এলাকা ও মেডি বাংলা হাসপাতালের উত্তর পাশসহ অত্র এলাকায় গ্যাসের তীব্র সংকট রয়েছে।
কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন ডা. আবদুল মাজেদ, হাজী আব্দুস সালাম, সুরুজ, হাজী আবদুল গনি, মিসেস নুর তাজ বেগম, হাজী দেলোয়ার, মো. নাজিমুদ্দীন রনি, হাজী আজিজুল হক আরজু, হাজী সাবের হোসেন সর্দার, হাজী শওকত হোসেন, মুসফিকুর রহমান টিপু, শেখ সুলতান পারভেজ ও মো. সালেহ আহমেদ প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/শআ