শনিবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

সিলেটে ২৬ বছরে প্রাণ গেল ৫০ ছাত্রের

ছাত্ররাজনীতির নামে সহিংসতা

সিলেটে ছাত্ররাজনীতির নামে সংঘাতে হত্যার মিছিল ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে। গত ২৬ বছরে ছাত্ররাজনীতির বলি হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। গত বৃহস্পতিবার যার সর্বশেষ শিকার হলেন সুমন দাস। রাজনৈতিক সন্ত্রাসের ফাঁদে পড়ে লেখাপড়া করতে এসে প্রাণ হারাতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। একের পর এক প্রাণহানির ঘটনায় মামলা হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ধরা পড়ে না আসামিরা। আবার কদাচিৎ ধরা পড়লেও কিছু দিন পরই জামিনে বেরিয়ে যায় তারা। কেবল প্রতিপক্ষ দলের সঙ্গে নয়, আধিপত্য বিস্তার আর অভ্যন্তরীণ কোন্দল থেকে নিজ দলের মধ্যেও প্রাণঘাতী সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে ছাত্রনেতা নামধারী সন্ত্রাসীরা। হত্যা করছে নিজ দলের অনুসারীদেরই। বৃহস্পতিবার শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিহত ছাত্রলীগ কর্মী সুমন নিজ দলের অনুসারীদের গুলিতেই নিহত হন। ১৯৮৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর শিবির ক্যাডারদের হাতে খুন হন জাসদ ছাত্রলীগ নেতা মুনীর-ই-কিবরিয়া চৌধুরী, তপনজ্যোতি ও এনামুল হক জুয়েল। এর মধ্য দিয়েই শুরু সিলেটে হত্যার রাজনীতি। এর পর ধারাবাহিকভাবেই ছাত্ররাজনীতির নামে খুনোখুনির ঘটনা ঘটেছে। চলতি বছরে সিলেটে ছাত্ররাজনীতির বলি হয়ে সুমন ছাড়াও ওসমানী মেডিকেল কলেজ ছাত্রদল নেতা তাওহিদুল ইসলাম ও মহানগর ছাত্রদল নেতা জিল্লুল হক জিলু খুন হন। তাওহিদ ৪ জুন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হামলায় ও ২৭ জুন নিজ দলের ক্যাডারদের হামলায় নিহত হন জিলু। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে নগরীর শিবগঞ্জে নিজ দলের ক্যাডারদের হামলায় খুন হন ছাত্রদল নেতা সজিব আবদুল্লাহ। ২০১১ সালের ১৮ অক্টোবর ছাত্রদলের হামলায় নিহত হন ছাত্রলীগ কর্মী আবদুল্লাহ আল মামুন ওরফে শিহাব। ২০১০ সালের ১২ জুলাই অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে খুন হন এমসি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা পলাশ। একই বছরের সেপ্টেম্বরে প্রতিপক্ষ গ্রুপের হামলায় খুন হন ছাত্রদল কর্মী সৌরভ ও ৬ মে নগরীতে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে মারা যান ছাত্রদল কর্মী সাজু আহমদ।

এ ছাড়াও ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে ১৯৯১ সালে বিশ্বনাথ কলেজে বিধান, ১৯৯৩ সালের ২৩ মে সরকারি কলেজে দুলাল, ১৯৯৪ সালে এনামুল হক মুন্না, ১৯৯৫ সালে মুরাদ চৌধুরী সিপার ও মুহিন খান নিহত হন। শিবিরের হাতে ১৯৯৮ সালের ২৪ মে ওসমানী মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগ নেতা সৌমিত্র বিশ্বাস, ২০০২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর মদন মোহন কলেজ ছাত্রদল নেতা হামিদ আহমদ খান দোয়েল ও ২০০৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর সিলেট ভেটেরিনারি কলেজ ছাত্রদল নেতা রফিকুল হাসান সোহাগ খুন হন। ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষে ১৯৯১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ছাত্রদল কর্মী মাহবুব আলম, ১৯৯৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বাবুল আহমদ রাহী, ১৯৯৭ সালের ৪ জানুয়ারি রুহুল আমিন ও ১৯৯৮ সালের ২৩ মে শিবির কর্মী মহসিন খুন হন। এদিকে ছাত্রদলের হাতে ২০০৩ সালের ৭ জানুয়ারি সিলেট সরকারি কলেজে ছাত্রদল কর্মী আকবর সুলতান নিহত হন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর