শিরোনাম
রবিবার, ১২ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

রাজশাহীতেও বিএনপি টলমলে

সঠিক নেতৃত্বের অভাবেই দলে একাধিক সিদ্ধান্ত

কাজী শাহেদ ও মর্তুজা নুর, রাজশাহী

রাজশাহীতেও বিএনপি টলমলে

বিএনপি এমপিদের শপথ গ্রহণ ও দলীয় কার্যক্রমের টলমলে অবস্থানের ফলে রাজশাহীর তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অনেকেই একসঙ্গে চার এমপির শপথকে সঠিক বলে মনে করছেন। আবার অনেকেই মির্জা ফখরুলের শপথ না নিয়ে এমপি পদ হারানোর অবস্থানকেও সঠিক বলে মনে করছেন। তবে বিএনপির এই টলমলে অবস্থান নিয়ে দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম ক্ষোভ।

তাদের দাবি, দল নিশ্চয় সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না। সঠিক নেতৃত্বের অভাবেই দলের ভিতরে একাধিক সিদ্ধান্ত দেখা দিচ্ছে। এ কারণে তৃণমূল নেতা-কর্মীরাও এসব নিয়ে এখন আর তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আশরাফুল কবির বুলু বলেন, ‘বিএনপির বর্তমান অবস্থান নিয়ে দুর্গাপুরের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যে কোনো আলোচনা দেখছি না। এসব নিয়ে কারও তেমন কোনো আগ্রহও নেই। দল সঠিকভাবে পরিচালিত হলে হয়তো সবাই আবার দলীয় সিদ্ধান্তের ব্যাপারে মনোযোগী হবেন।’

রাজশাহী জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুন বলেন, ‘চার এমপির শপথ নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রথমে তৃণমূলে আমাদের মধ্যে একটু ভুল বোঝাবুঝি ছিল। তবে যেহেতু তারা বলছেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তেই তারা এটি করেছেন, সেহেতু তিনি যা ভালো মনে করেছেন তা-ই করেছেন। তবে এ চার এমপি এখন যদি সংসদে গিয়ে দলের চেয়ারপারসনের মুক্তি ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য সোচ্চার হতে পারেন, তাহলে যেটুকু হতাশা ছিল সেটুকু হয়তো কেটে যাবে।’

রাজশাহী মহানগরী বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন বলেন, ‘২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে রাতের আঁধারেই ভোট হয়ে গেছে। এ নির্বাচন নিয়ে শুধু বিএনপি নেতা-কর্মীই নন, সাড়ে ৮ কোটি বাঙালির হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। তার পরও নানা প্রতিকূলতার মধ্যে বিএনপি জোটের কয়েকজন প্রার্থী এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের ওপরে অবশ্যই এলাকার জনগণের চাপ রয়েছে। তবে এসব বিষয় নিয়ে দলীয় ফোরামে কখনো মুখ খোলার সুযোগ পেলে সেখানেই আমরা আমাদের বক্তব্য তুলে ধরব।’ রাজশাহী মহানগরী বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, ‘যে চার এমপি শপথ নিয়েছেন, নিশ্চয় দলের সিদ্ধান্তেই নিয়েছেন। কারণ, দলীয়ভাবে এমপি হারুনকে সংসদ নেতাও মনোনীত করা হয়েছে। পাশাপাশি দলের মহাসচিব যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাও সঠিক। তবে যারা শপথ নিয়েছেন তারা যে পদত্যাগ করতে পারবেন না তা নয়।

দলের কৌশল হিসেবেই হয়তো এসব সিদ্ধান্ত এসেছে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার যে কৌশলে এগোচ্ছে, সে কৌশলই বিএনপিও নিয়েছে। জনগণকে বিমুখ না করতেই এ কৌশল নেওয়া হয়েছে বলে আমি মনে করি। এর মাধ্যমে জনগণের প্রত্যাশাও পূরণ হয়েছে।’

রাজশাহী বিএনপির আরেক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘বিএনপি এখন টলমলে অবস্থায়। সঠিক নেতৃত্বের জায়গায় নেই বিএনপি। এ কারণে দলের মধ্যে একাধিক সিদ্ধান্ত আসছে। দলের নেতা-কর্মীরা হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তের বাইরেও অবস্থান নিচ্ছেন। ফলে বিএনপির মধ্যে এখন বিভক্ত স্পষ্টতই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে দ্রুত দলের পুনর্গঠন ছাড়া শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।

অন্যদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি বিএনপি সমর্থক শিক্ষক অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম ফারুকী বলেন, ‘এটা একটা রাজনৈতিক ব্যাপার। তারা কীভাবে এসব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তা এখান থেকে আমরা সেভাবে বুঝতে পারছি না। তারা যে সিদ্ধান্তগুলো নিচ্ছেন, যেভাবে নিচ্ছেন আমি মনে করি তারা সেগুলো দলের কথা দেশের মঙ্গলের কথা ভেবেই নিচ্ছেন।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর