শনিবার, ৯ মে, ২০২০ ০০:০০ টা
চট্টগ্রাম

ইফতার পার্টির টাকা এবার খরচ হচ্ছে দরিদ্রকল্যাণে

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবই পাল্টে দিয়েছে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলোর নেতাদের আচার-আচরণ। বিগত বছরগুলোর রমজানের মতো তাদের মধ্যে নেই ইফতার ও সাহরি পার্টিতে অংশগ্রহণের তাড়া। করপোরেট প্রতিষ্ঠান থেকে সামাজিক সংগঠন কারও নেই ইফতার পার্টি আয়োজনের ব্যস্ততা। বরং তাদের প্রচেষ্টা কর্মহীন ও হতদরিদ্র মানুষের পাশে থাকার। ইফতার পার্টি দিতে যে খরচ সেই টাকা এবার খরচ হচ্ছে দরিদ্র মানুষের কল্যাণে। তাই নেতারা ব্যস্ত ইফতার ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণে। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘প্রত্যেক বছর রমজানে ইফতার পার্টি নিয়ে ব্যস্ততা থাকলেও এবারের চিত্র একেবারের ভিন্ন। এ রমজানে ইফতার সামগ্রী ও ত্রাণ বিতরণ নিয়ে ব্যস্ততা কাটছে।’ চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, অন্যান্য বছর রোজার সময় ব্যস্ত থাকতে হতো ইফতার পার্টি ও নানান সামাজিক অনুষ্ঠান নিয়ে। করোনার কারণে এসব বন্ধ থাকলেও ব্যস্ততা মোটেও কমেনি। এখন দিনের বেশির ভাগ সময় ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ ও ফেসবুকে লাইভ নিয়ে। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘করোনা প্রাদুর্ভাব রোজার স্বাভাবিক চিত্রই পাল্টে দিয়েছে।

 এখন ইফতার পার্টি ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের তাড়া না থাকলেও ব্যস্ততা বরং বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে চেষ্টা করছি সামর্থ্যরে সবটুকু দিয়ে সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ত্রাণ ও ইফতার সামগ্রী বিতরণ করছি।’

প্রতি বছর রমজানের শুরু থেকে ইফতার পার্টি, সাহরি পার্টি, খতমে তারাবি, দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হতো আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ সব দলের নেতাদের। তাড়া থাকত সাংগঠনিক ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে ইফতার মাহফিল আয়োজনেও। কিন্তু করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব পাল্টে দিল বিগত বছরের নেতাদের রোজার সময়কার ‘স্বাভাবিক সূচি’। এবার রমজানে কোনো নেতার নেই ইফতার ও সাহরি পার্টিতে অংশগ্রহণের ব্যস্ততা। নেই নেতা-কর্মী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মানে ইফতার ও সাহরি পার্টির আয়োজনের পরিকল্পনা ও তাড়া। তারা এখন ব্যস্ত ত্রাণ ও ইফতার সামগ্রী বিতরণে। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতারা ব্যস্ত ত্রাণ সামগ্রী এবং ইফতার সামগ্রী বিতরণে। একই অবস্থা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ, জেলা পুলিশ, চট্টগ্রাম ওয়াসা, সিডিএ, চট্টগ্রাম চেম্বারসহ ব্যবসায়িক সংগঠন, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পেশাজীবী সংগঠন, সাংবাদিক সংগঠন, চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা, চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা, সামাজিক সংগঠন, মহল্লা কমিটির অবস্থা। এসব প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন প্রতি বছর বিশিষ্ট ব্যক্তি ও সদস্যদের সম্মানে ইফতার পার্টি আয়োজন করলেও এবার নেই ইফতার পার্টির আয়োজন। ইফতার পার্টির যে খরচ হতো তা দিয়ে এবার তারা হতদরিদ্রদের মাঝে ত্রাণ ও ইফতার সামগ্রী বিতরণ করছেন। প্রতি বছর চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী গ্রæপ ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্যোগে বিলাস বহুল হোটেল রেস্টুরেন্টগুলোতে ইফতার পার্টির আয়োজন করা হলেও এবার নেই তাদের ইফতার ও সাহরি পার্টির পরিকল্পনা। এ প্রতিষ্ঠানগুলোও এখন ব্যস্ত ইফতার সামগ্রী বিতরণে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর