শনিবার, ২৩ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

ঈদের আগে হচ্ছে না রেল কর্মীদের বেতন-বোনাস

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

করোনাভাইরাসসহ নানা জটিলতায় স্বাধীনতা পরবর্তী এবার প্রথম বেতন-বোনাস ছাড়াই ঈদ উদযাপন করবেন মাঠ পর্যায়ের বেশিরভাগ রেলের কর্মচারী। ফলে রেলের এসব কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের এক প্রকার না খাওয়ার মতোই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত পূর্বাঞ্চল রেলের বেশিরভাগ কর্মচারীর বেতন, বৈশাখী ভাতা ও পেনশন ভাতা পাননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব নিয়েই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক তোলপাড় চলছে। প্রশ্ন উঠছে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বশীলতার বিষয়েও। অন্যদিকে সর্বশেষ গত কয়েক দিনে চট্টগ্রামে রেলের পে অ্যান্ড ক্যাশ বিভাগ থেকে বেতন-ভাতা দেওয়া হলেও বৃহস্পতিবার অর্থ সংকটে পেনশন ভাতা দিতে পারেনি। চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা রেলের সাবেক বয়স্ক কর্মীরা সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বসে থেকেও পেনশন ভাতা তুলতে পারেননি বলে সাবেক রেল কর্মীসহ সংশ্লিষ্টরা জানান। রেলওয়ে শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি হুমায়ুন কবির বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে নানা জটিলতায় রেল কর্মচারীদের বেতন-বোনাসের বিষয়ে সমস্যা হয়েছে। এখনো রেলের অনেক কর্মচারী বেতন-বোনাস পাননি। ঈদের আগেই অন্য কোনো উপায়ে হলেও বেতন-বোনাস দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। রেলওয়ে কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের দফতর সম্পাদক শাহাজান পাটোয়ারী সাজু বলেন, দীর্ঘ চাকরি জীবনে এবং রেলের ইতিহাসে এবার প্রথম বেতন বোনাস ছাড়াই ঈদ করতে হচ্ছে। এই দায় কার? তাদের বিচার করতে হবে বললেন এ নেতা। রেলওয়ের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা বলেন, এখনো এপ্রিলের  বৈশাখী ভাতা পায়নি। প্রতি মাসের শুরুতে বিগত মাসের বেতন-ভাতা হয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত এপ্রিলের বেতন পাননি। ঈদের আগে মে মাসের বেতন-ভাতা দেওয়ার কথা থাকলেও সেটা হচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।

 কেউ কেউ এপ্রিলের বেতন পেলেও ঈদ বোনাস পাননি। করোনার কারণে মাঠ পর্যায়ে কাজ করার পরও বেতন-ভাতা নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা কর্মীদের হতাশ করেছে।

পূর্বাঞ্চলের পে অ্যান্ড ক্যাশ বিভাগের ম্যানেজার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, স্টেশন বন্ধ থাকলে রেলের নিজস্ব তহবিল থেকে বেতন-ভাতা ও পেনশন ভাতা দিতে হয়। নানা কারণে টাকা তুলে এনে কর্মীদের দিতে একটু সময় লাগে। চেষ্টা করছি ঈদের আগেই যে কোনোভাবে পাওনা পরিশোধ করতে। তবে করোনাভাইরাসের পরিস্থিতিতে এবং কর্মী সংকটে কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে ২৫ মার্চ সন্ধ্যা থেকে সারা দেশে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থায় পরিচালন ব্যয় নির্বাহে স্টেশনের মাসিক আয়ের ওপর নির্ভরশীল রেলওয়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে বেতন-ভাতা ও পেনশন প্রদানে উদ্যোগী হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে দ্রুত ইএফটির মতো (ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার) নতুন পদ্ধতি চালু করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে সংস্থাটি। এতে নগদে প্রদানের ক্ষেত্রে ফান্ড সংকটে বিলম্বিত হচ্ছে। করোনার কারণে সেকশনভিত্তিক আয় কমে যাওয়ায় মার্চ ও এপ্রিলে বিশেষ ট্রেনে করে বেতন-ভাতা ও পেনশন পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাও করে রেলওয়ে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর