শনিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

সবজির অগ্নিমূল্যে নাকাল ক্রেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

সবজির অগ্নিমূল্যে নাকাল ক্রেতা

বাজার দর

দেশে ভয়াবহ বন্যার প্রভাবে রাজধানীর বাজারগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ছেই। ঊর্ধ্বমুখী  বাজারে নতুন করে কোনো কোনো সবজির দাম এক মাসের ব্যবধানে দ্বিগুণ হয়েছে। কাঁচামরিচ ও আলুর দাম বেড়েছে।  নতুন করে দাম বেড়েছে পিয়াজ, আদা ও রসুনের। তবে আশাব্যঞ্জকভাবে কেজিতে ১০০ টাকা কমেছে গরুর মাংসের দাম। খাসির মাংসের দাম কমেছে কেজিতে ৫০ টাকা। দাম কমেছে মুরগি ও ডিমের। অপরিবর্তিত রয়েছে চাল, ডাল, তেল ও মসলার দাম। রাজধানীর হাতিরপুল, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা, ফকিরাপুল, মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি কলোনি ও খিলগাঁও কাঁচাবাজারে সরেজমিন জানা গেছে, এ সময়ে শীতের আগাম সবজি বাজারে চলে আসে। ফলে কম দামেই বিক্রি হয় সবজি। কিন্তু বাজারে এখনো বেশিরভাগ সবজির দাম চড়া। এ বাড়তি দাম নিয়ে বিক্রেতারা তুলেছেন বন্যার অজুহাত। আর ক্রেতারা দুষছেন প্রশাসনের দুর্বল মনিটরিং ব্যবস্থাকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজারে পর্যাপ্ত সবজির সরবরাহ থাকলেও বন্যার অজুহাতে দুই মাস ধরেই দাম ঊর্ধ্বমুখী। সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও দাম বেড়েছে বেশিরভাগ সবজির। এসব বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কচুরমুখী ৫০ থেকে ৬০ টাকা ও কাঁচাকলা প্রতি হালি ৪০ টাকা। কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে প্রতি কেজি শসা (দেশি) ৮০ টাকা, হাইব্রিড জাতের ৫০ থেকে ৬০ টাকা, গাজর (আমদানি) ৯০ থেকে ১০০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, উস্তা ১০০ টাকা, মানভেদে ঝিঙা-ধুন্দল ৭০ টাকা, চিচিঙা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কাকরোল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ থেকে ৭০ টাকা, পটল ৭০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ১০০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা ও কাঁচামরিচ ২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। বাজারে প্রতি আঁটি লালশাক বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা, মুলা ও কলমি শাক ২০ টাকা, লাউ ও কুমড়া শাক ৪০ টাকা, পুঁই শাক ৩০ থেকে ৩৫ টাকা ও ডাঁটাশাক ২৫ থেকে ৩০ টাকা। এসব বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট (নতুন) চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা, মিনিকেট পুরান ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা, বাসমতি ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, আতপ ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, পোলাও ৯৫ থেকে ১০০ টাকায়। এ ছাড়া গুটি চাল বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৪ টাকা, পায়জাম ৪৫ টাকা, আটাশ ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা ও স্বর্ণা চাল ৪২ থেকে ৪৪ টাকায়। প্রতি কেজি ডাবলি ডাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা, অ্যাংকর ৫০ টাকা, দেশি মসুর ১২০ টাকা ও মসুর ডাল (মোটা) ৮০ টাকা কেজি দরে। খোলা সয়াবিন তেল (লাল) ৯৫ থেকে ১০৫ টাকা ও সাদা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা লিটার। আমজাদ নামে শান্তিনগর বাজারের বিক্রেতা বলেন, বাজারে মালামাল না এলে দাম এমনিতে বেড়ে যায়।

এখন বন্যার কারণে মালামাল সংকট আছে। তাই বাড়তি দাম দিয়ে মালামাল কিনতে হচ্ছে। তবে তার কথার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে ক্রেতা রহিম মিয়া বলেন, বাজারে সবজির সরবরাহ পর্যাপ্ত। তাহলে কেন দাম বাড়বে। ক্রেতার পকেট কাটায় ব্যস্ত বিক্রেতারা। অপরদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে মাংসের দাম কমেছে। রাজধানীতে প্রতি কেজি গরু মাংস ৫০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। একই সঙ্গে ৭৩০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে খাসির মাংস। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে গরুর মাংসে দাম কমেছে কেজিতে প্রায় ১০০ টাকা। ও খাসির মাংসে কমেছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। এর আগে গরু মাংস ছিল ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি। আর ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা ছিল খাসির মাংসের কেজি। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে পাঁচ টাকা কমে প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা ও লেয়ার মুরগি ২৪০ টাকা। আর ১০ টাকা কমে প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা। তবে দেশি মুরগির দর ৫০ টাকা কমে ৫৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া রোস্টের মুরগি প্রতি চার পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায়। এসব বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি ডজন ডিমে দাম কমেছে পাঁচ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত। বাজারে প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকায়। ১০ টাকা কমে দেশি মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা ডজন। সোনালি মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। আর হাঁসের ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। অপরিবর্তিত রয়েছে মাছের দাম। এসব বাজারে প্রতি কেজি কাঁচকি মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, মলা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, দেশি টেংরা ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, নদীর টেংরা (বড়) ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, শিং ২৮০ থেকে ৪০০ টাকা, দেশি শিং ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, পাবদা ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, দেশি চিংড়ি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, কই মাছ ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা, রুই ১৮০ থেকে ৩০০ টাকা, মৃগেল ১৭০ থেকে ২৮০ টাকা, পাঙাস ১১০ থেকে ১৬০ টাকা, তেলাপিয়া ১১০ থেকে ১৫০ টাকা ও কাতল ১৮০ থেকে ২৮০ টাকা। এসব বাজারে প্রতি সোয়া কেজি থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫০ থেকে এক হাজার ১০০ টাকা, এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ থেকে এক হাজার টাকায়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর