মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

ধর্ষণে জন্ম নেওয়া সন্তানের স্বীকৃতি দিল আদালত, ধর্ষকের যাবজ্জীবন

দীর্ঘ ১৩ বছর অপেক্ষার পর রায়

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

রংপুরের পীরগাছায় এক কিশোরীকে ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া সন্তানের স্বীকৃতি দিয়েছে আদালত। সেই সঙ্গে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক। গতকাল দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ এর বিচারক মো. রোকনুজ্জামান এ রায় দেন। এ ছাড়াও ওই সন্তানের ভরণপোষণ প্রদানসহ ধর্ষকের ওয়ারিশ হিসেবে ঘোষণা দেন বিচারক। রায় ঘোষণার সময় অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, পীরগাছার অন্নদানগর ইউনিয়নের অন্নদানগর গ্রামের দিনমজুর হানিফ উদ্দিন স্ত্রী-সন্তানদের রেখে অন্যত্র চলে যাওয়ায় ওই ইউনিয়নের সাতদরগাহ হরিচরণ গ্রামে মায়ের বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন হানিফ উদ্দিনের স্ত্রী। হানিফের বড় মেয়েকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতেন প্রতিবেশী মৃত মজিবর রহমানের ছেলে পান ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম। ২০০৭ সালের ২৬ অক্টোবর বিকালে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন শফিকুল। পরে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়। ২০০৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ওই বাড়িতে গিয়ে জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন শফিকুল ও তার স্বজনরা। পরে মেয়েটি বাদী হয়ে ২০০৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি আদালতে শফিকুলসহ তার বাবা মজিবর, চাচা মমতাজ উদ্দিন ও ফুফু নজিরনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলা চলাকালীন অবস্থায় মজিবর মারা যান এবং ২০০৮ সালের ৪ আগস্ট একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেয় ওই কিশোরী। এদিকে শফিকুলও অন্যত্র বিয়ে করে সংসার শুরু করেন। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে ধর্ষণে জন্ম নেওয়া শিশুর এবং ধর্ষকের ডিএনএ পরীক্ষা ও ৬ জন  সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে দীর্ঘ ১৩ বছর পর গতকাল এ রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে অপর দুই আসামিকে খালাস দিয়েছেন বিচারক। মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ এর পিপি জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন বলেন, যাবজ্জীবন কারাদন্ড ছাড়াও ১ লাখ টাকা জরিমানা আদায় এবং ধর্ষকের ওয়ারিশ হিসেবে সম্পত্তির অংশীদারিত্বের রায় দিয়েছেন বিচারক।

যদি ধর্ষকের কোনো সম্পত্তি না থাকে তাহলে ওই শিশুর ব্যয়ভার রাষ্ট্রকে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর