মঙ্গলবার, ২৩ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

সাংবাদিক পরিচয়ে প্রতারণায় গ্রেফতার ১০

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট টিভি (বিএসটিভি নিউজ ২৪)’ নামে অনলাইন ভিত্তিক একটি চ্যানেলে সাংবাদিক ও প্রতিনিধি নিয়োগের নামে ঘুষ নেওয়ার অপরাধে ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। তারা হলেন শাহিন খান, নূর হোসেন ওরফে নুরুল ইসলাম নাহিদ, রিয়াদ মাহমুদ, রিমন পারভেজ, জয়নুল আবেদীন, আকবর হোসেন, রাজীব হোসেন, রায়হান পারভেজ, ইমরুল কাইয়েচ ওরফে ফয়েজ ও আইয়ুব খান।

গত রবিবার রাজধানীর হাতিরঝিল ও মতিঝিল এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের স্ট্যান্ডসহ ক্যামেরা, কম্পিউটার, ভিজিটিং কার্ড ও ব্যানার উদ্ধার করা হয়।

গতকাল বিকালে রাজধানীর মিরপুরে র‌্যাব-৪ এর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে অনুমোদনহীন অনলাইন ভিত্তিক ভুয়া স্যাটেলাইট টিভিতে সাংবাদিক প্রতিনিধি নিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে শিক্ষিত বেকার ও নিরীহ যুবক/যুবতীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করে আসছিল। প্রতারণার কৌশল হিসেবে তারা জানাত, বিভিন্ন জেলায় তাদের বিশেষ প্রতিনিধি নিয়োগ করা হয়েছে। তারা নামি-দামি ব্র্যান্ডের গাড়ি ব্যবহার করত। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গাড়ি ফটোশপের মাধ্যমে এডিট করে বিএসটিভি নিউজ ২৪ চ্যানেলের কথিত লোগো ব্যবহার করত। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রিপোর্টার নিয়োগের আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন প্রচার করে আসছিল। বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে যারা চাকরির জন্য যোগাযোগ করত, তাদের কাছ থেকে জনপ্রতি ১৫-২৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিত। এ কার্যক্রমের জন্য মাঠ পর্যায়েও তাদের বিভিন্ন সহযোগী রয়েছে।

র‌্যাব কর্মকর্তা আরও জানান, এসএসসি পর্যন্ত পড়ালেখা করা গ্রেফতার শাহিন মতিঝিলে ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসার পাশাপাশি বেবি ফুডসের পরিবেশক হিসেবে কাজ শুরু করে। এ ছাড়াও সে বিদেশে লোক পাঠানোর উদ্দেশে এ পর্যন্ত ১২টি দেশে ভ্রমণ করেছে। শাহিন ও নূর হোসেন চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করে আসছিল। শাহিনের বাসা এবং অফিসে প্রতিদিন অনেক ভুক্তভোগী এসে তাদের পাওনা টাকা ফেরত চাইলে তার নিজস্ব অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি ও হুমকি দেখিয়ে তাদের তাড়িয়ে দিত। গ্রেফতার শাহিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

নূর হোসেনও এসএসসি পর্যন্ত পড়ালেখা করে। সে দীর্ঘদিন ধরে কাতারে থাকার কারণে হিন্দি, ইংরেজি এবং আরবি ভাষা ভালোভাবে রপ্ত করে। ২০১৬ সালে দেশে ফিরে ‘চাঁদের আলো সমবায় সমিতি’ নামে একটি এনজিও প্রতিষ্ঠান তৈরি করে। কাউকে চাকরির কথা বলে টাকা নেওয়া, কাউকে বিদেশ পাঠানো, কারও কাছ থেকে বিনিয়োগ নিয়ে লাপাত্তা, কাউকে ঠকানোই ছিল নাহিদের প্রতিদিনের কাজ। এ ছাড়া তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার করে নারীদের ব্ল্যাকমেইল করত। গ্রেফতার অন্য আটজন শাহিন ও নূরকে বিভিন্নভাবে প্রতারণার কাজে সহায়তা করত।

সর্বশেষ খবর