বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

রাজশাহীতে মেয়রের বাড়ি থেকে কোটি টাকা, অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভার মেয়র মুক্তার আলীর বাড়ি থেকে প্রায় কোটি টাকা, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাত ১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত আড়ানীর পিয়াদাপাড়া মহল্লায় মেয়র মুক্তারের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। বাড়ি থেকে একটি অবৈধ বিদেশি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটার গান, দেশে তৈরি একটি বন্দুক, একটি এয়ার রাইফেল, শটগানের ২৬ রাউন্ড গুলি, চারটি পিস্তলের ম্যাগজিন, পিস্তলের ১৭ রাউন্ড গুলি, চারটি গুলির খোসা, ১০ গ্রাম গাঁজা, ৭ পুরিয়া হেরোইন, ২০ পিস ইয়াবা, নগদ ৯৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা এবং মেয়রের সই করা দুটি চেক জব্দ করা হয়েছে। চেকে টাকার পরিমাণ ১৮ লাখ। মেয়র মুক্তারের স্ত্রী জেসমিন আক্তার (৪০) এবং দুই ভাতিজা সোহান (২৫) ও শান্তকেও (২৩) আটক করে পুলিশ। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান মুক্তার আলী। সোহানের বাবার নাম নবাব আলী। আর শান্তর বাবার নাম সামিরুল। মুক্তার আলী আড়ানী পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। জানুয়ারিতে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করে তিনি বহিষ্কৃত হন। এর আগে ২০১৫ সালে দলীয় মনোনয়নেই মেয়র হয়েছিলেন। মেয়রের বাড়িতে অভিযানের পর গতকাল দুপুরে রাজশাহীর এসপি এ বি এম মাসুদ হোসেন তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।

সেখানে তিনি জানান, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে পৌরসভার জয়বাংলা মোড়ে বাড়িসংলগ্ন ওষুধের দোকানে বসে ছিলেন মনোয়ার হোসেন মজনু। তিনি নাটোরের বাঁশবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক। গত পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী শহীদুজ্জামানের পক্ষে কাজ করেন। এ কারণে তার ওপর ক্ষিপ্ত মেয়র মুক্তার মদ্যপ অবস্থায় দলবল নিয়ে মজনুর দোকানের সামনে গিয়ে গালিগালাজ শুরু করেন। একপর্যায়ে মজনু ও তার স্ত্রী এবং ছেলেকে মারধর করেন।

এ ঘটনায় রাতেই মজনু মেয়র মুক্তার ও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. অঙ্কুরের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত তিন-চার জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সে রাতেই পুলিশ মুক্তারের বাড়িতে অভিযান চালায়।

এসপি জানান, বাড়িতে পাওয়া কোটি টাকার উৎস জানাতে পারেনি পরিবার। আর আগ্নেয়াস্ত্রগুলোর কোনো লাইসেন্স নেই। তিনি জানান, আগে থেকেই মেয়রের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা ছিল। নতুন করে শিক্ষক মজনু একটি মামলা করেছেন। এ ছাড়া অস্ত্র, টাকা ও মাদক উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ আরও তিনটি মামলা করবে। মেয়রকে আটকের জন্য পুলিশ ইতিমধ্যে অভিযান শুরু করেছে বলে জানান এসপি।

সর্বশেষ খবর