শুক্রবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

বরিশাল বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে কলহ সংঘাত

রাহাত খান, বরিশাল

বরিশাল জেলা বিএনপির নতুন গঠিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্যদের মধ্যে কলহ আর সংঘাত লেগে গেছে। এ নিয়ে বিস্ফোরণোন্মুখ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কলহ যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা।

পুরনো জেলা (দক্ষিণ) বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্র গত ৩ নভেম্বর মজিবর রহমান নান্টুকে আহ্বায়ক ও আক্তার হোসেন মেবুলকে সদস্য সচিব করে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে। আরও ৪৫ জনকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে ৪৭ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদিত হয় ২২ জানুয়ারি। কমিটির পরিচিতি সভা আয়োজনের জন্য গত মঙ্গলবার রাতে বিএনপি কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় আলোচনায় বসেন নেতারা। ওই সভায় পরিচিতি সভায় বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদককে প্রধান অতিথিসহ অপর দুজন সাংগঠনিক সম্পাদকের উপস্থিতিতে পরিচিতি সভা করার বিষয়ে আলোচনা হয়। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আক্তার হোসেন মেবুল প্রস্তাবিত পরিচিতি সভায় যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন নান্নুকে রাখার প্রস্তাব করেন। আহ্বায়ক মজিবর রহমান নান্টু প্রস্তাবের বিরোধিতা করলে মেবুল ‘আপনি এত বেশি বোঝেন কেন’; শিরিন (সাংগঠনিক সম্পাদক) কি এখানে এমপি নির্বাচন করবে?’ এ সময় জেলা কমিটির সদস্য সাব্বির নেওয়াজ সাগর সিনিয়রের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করতে বারণ করেন তার চেয়ে বয়সে ছোট মেবুলকে। সভার শেষ পর্যায়ে আহ্বায়ক নান্টু চা চক্র করে উভয়ের ভুল বোঝাবুঝির অবসান এবং মেবুল ও সাগরের মধ্যে আলিঙ্গন করিয়ে দেন। আলিঙ্গনরত সাগর ‘ফরগেট অ্যান্ড ফরগিভ’ বলে ঘটনার জবনিকাপাত ঘটান। সাগর বলেন, অনুষ্ঠান শেষে আহ্বায়ক বের হয়ে যেতেই মেবুলের মোটরসাইকেল চালক কোতোয়ালি ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবদুল কাদেরসহ ৮-১০ জন তার ওপর হামলে পড়ে। তারা তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত অন্যরা তাকে রক্ষা করেন। মেবুলকে রাজনীতিতে আরও ধৈর্যশীল হতে হবে বলে মনে করেন নির্যাতনের শিকার সাগর। প্রত্যক্ষদর্শী জেলা বিএনপির একাধিক সদস্য বলেন, গতানুগতিক ধারার বাইরে পরিবর্তনের জন্য নতুন কমিটি দিয়েছেন তারেক রহমান। সেখানে সংঘাত-ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ কাম্য নয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলা বিএনপিতে বিস্ফোরণোন্মুখ পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে জানান তারা। সদস্য সচিব আক্তার হোসেন মেবুল বলেন, তিনি কারও সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেননি। তার কোনো অনুসারী নেই। তিনি একাই রাজনীতি করেন।   সাগরের ওপর কে বা কারা হামলা চালিয়েছে তা তিনি জানেন না। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মজিবর রহমান নান্টু  বলেন, তিনি জেলা বিএনপির প্রার্থী ছিলেন না। তারেক রহমান ডেকে এনে তাকে পদ দিয়েছেন। তিনি একটা পরিবর্তন আনতে চান। আলোচনা সভায় সদস্য সচিব মেবুলের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের সূত্র ধরেই সংঘাত হয়েছে। একজন সাবেক ছাত্রনেতা সাগরকে তারা মারধর করেছে। হামলাকারীদের প্রধান কাদের মেবুলের মোটরসাইকেল চালায়। হামলা এবং ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের সাংগঠনিক বিচার দাবি করেন তিনি। একই সঙ্গে গঠিত বরিশাল মহানগর বিএনপির ৪২ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটির সদস্যদের মূল্যায়ন-অবমূল্যায়ন নিয়েও অসন্তোষ চলছে  ভিতরে ভিতরে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর