মঙ্গলবার, ২৪ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

তালাকের পর ফের সংসার শুরুর ২ দিনের মাথায় স্ত্রীকে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকার কেরানীগঞ্জে রেশমা আক্তারকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় তার স্বামী নুরুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। ঘটনার ১৫ দিন আগে তাদের বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে। রবিবার     রাতে রাজধানীর কাকরাইল থেকে নুরুলকে গ্রেফতার করা হয়। 

স্ত্রীকে হত্যার পর গ্রেফতার এড়াতে বরিশাল ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন শেষে ঢাকায় ফিরে কাকরাইল এলাকায় অবস্থান নিয়েছিলেন তিনি। গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান র‌্যাব-১০এর অধিনায়ক (সিও) ডিআইজি মাহফুজুর রহমান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ঘটনার দিন ১৭ মে সকালে রেশমা ও নুরুল ইসলাম দুজনে মিলে তাদের ছেলে ইয়াসিনকে (১০) মাদরাসায় ভর্তি করাতে যান। মাদরাসা থেকে ফেরার পথে ইয়াসিনকে একা তার নানার বাসায় পাঠিয়ে দিয়ে দুজনে পাসপোর্ট ফটোকপি করতে যান। এরপরই বেলা পৌনে ১টার দিকে নুরুল তার শ্বশুরের বাসায় এসে জানান যে, রেশমাকে তার ভাড়া করা মেসে আটকে রেখে এসেছেন। এরপর স্বজনরা মেসের দরজা ভেঙে গলা কাটা রক্তাক্ত অবস্থায় রেশমার লাশ ফ্লোরে পড়ে থাকতে দেখেন। 

পরে রেশমার বোন বাদী হয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় নুরুল ইসলামসহ অজ্ঞাত দুই-তিনজনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, ১২ বছর আগে নিহত রেশমা আক্তারের সঙ্গে নুরুল ইসলামের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ১০ বছর বয়সী একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। বিয়ের কিছুদিন পর স্বামীর অনুমতিতে রেশমা জর্ডান চলে যান। জর্ডানে থাকাবস্থায় রেশমার সঙ্গে নুরুল ইসলামের সাংসারিক জীবনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিবাদ তৈরি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় তাদের সাংসারিক বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে রেশমা তার স্বামী নুরুল ইসলামকে তালাক দেন। গত ২৮ এপ্রিল রেশমা দেশে ফিরে এলে স্বামী নুরুল তালাক হওয়া সত্ত্বেও তাকে নিয়ে সংসার করার জন্য রেশমা ও তার মা-বোনসহ অন্য আত্মীয়-স্বজনদের কাছে বিভিন্নভাবে আকুতি-মিনতি করতে থাকেন। একপর্যায়ে রেশমাসহ সবাই নুরুলের কথায় রাজি হয়ে গত ১৫ মে আবারও সংসার শুরু করেন তারা।

র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রীকে হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা র‌্যাবকে জানিয়েছেন নুরুল। তিনি জানিয়েছেন, তিনি পেশায় বাবুর্চি। পাশাপাশি বোরকা তৈরির একটি কারখানা ছিল তার। কিন্তু মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকায় সেই কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। জর্ডান ফেরত স্ত্রী রেশমার সঙ্গে আবারও সংসার শুরু করার দুদিনের মাথায় রেশমার সঙ্গে কাতার প্রবাসী এক যুবকের সম্পর্কের সন্দেহসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিবাদের সৃষ্টি হয়। নুরুল ক্ষুব্ধ হয়ে পরিকল্পিতভাবে তার স্ত্রী রেশমাকে ভাড়া মেসে নিয়ে ধারালো চাকু দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন। হত্যার পরপরই নুরুল ইসলাম আত্মগোপনের জন্য প্রথমে বরিশাল, চাঁদপুর হয়ে চট্টগ্রাম যান। চট্টগ্রামে দুদিন অবস্থান করার পর সেখানেও নিজেকে নিরাপদ মনে না করে পুনরায় ঢাকা হয়ে বরিশাল যাওয়ার সময় র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হন। 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর