সোমবার, ৪ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

করোনার দাপট কমছে না চট্টগ্রাম নগরে

গত দুই বছর চার মাসে মহানগরে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান ৭৩৫ জন

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

করোনার দাপট কমছে না চট্টগ্রাম নগরে

চট্টগ্রামে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এরপর থেকেই করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু, শনাক্ত এবং নমুনা পরীক্ষায় মহানগর এলাকায় দাপট দেখাচ্ছে। গত দুই বছর চার মাসে চট্টগ্রাম মহানগরে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান ৭৩৫ জন এবং ১৫ উপজেলায় মারা যান ৬২৯ জন। এরই মধ্যে মহানগরে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৯২ হাজার ৭৩০ জন এবং উপজেলায় ৩৪ হাজার ৬২১ জন। মহানগরে নমুনা পরীক্ষা করা হয় ৯ লাখ ১১ হাজার ৬৫ জন এবং উপজেলায় ১ লাখ ৬৫ হাজার ৯৮ জন। সর্বশেষ গত শনিবারও নগরে একজন মারা যান।           

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরে ৫০টি এলাকা চিহ্নিত করে মৃত্যু শনাক্ত হয়। এর মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক মারা যান হালিশহরে ১০১ জন। এরপর কোতোয়ালি ও চান্দগাঁও এলাকায় ৫৯ জন করে। বন্দর এলাকায় মারা যান ৫৪ জন, পাঁচলাইশে ৪৭ জন, পাহাড়তলীতে ৪০ জন, চকবাজারে ৩৮ জন, পতেঙ্গায় ৩৩ জন, ডবলমুরিংয়ে ২৯ জন, বায়েজিদে ২৬ জন, আকবর শাহে ২৫ জনসহ মোট ৭৩৪ জন মারা যান।

তবে ১৫ উপজেলার মধ্যে সর্বোচ্চ মৃত্যু ছিল হাটহাজারীতে ১২৪ জন। এরপর রাউজানে ৬৪ জন, সীতাকুন্ডে  ৫৯ জন, পটিয়ায় ৫৪ জন, মীরসরাই ৪৭ জন, ফটিকছড়ি ৪৫ জন, বোয়ালখালীতে ৪৪ জন, সাতকানিয়া ও রাঙ্গুনিয়ায় ৪০ জন করে এবং লোহাগাড়ায় ২৮ জনসহ মোট ৬২৯ জন মারা যান। গত শনিবার পর্যন্ত চট্টগ্রামে মোট শনাক্ত হয় ১ লাখ ২৭ হাজার ৩৫১ জন। এর মধ্যে মহানগর এলাকায় ৯২ হাজার ৭৩০ জন এবং উপজেলায় ৩৪ হাজার ৬২১ জন। ইতোমধ্যে মারা গেছেন ১ হাজার ৩৬৪ জন।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের ইনচার্জ ডা. রাজদ্বীপ বিশ্বাস বলেন, করোনার শুরু থেকেই পরিসংখ্যানটা এমন চলছে। শহরে আক্রান্ত ও মৃত্যু বেশি এবং উপজেলায় কম। এর মূল কারণ হলো নগরের মানুষ সচেতন, নমুনা টেস্ট বেশি করে, নগর ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, মানুষ ও যানবাহন চলাচল বেশি। পক্ষান্তরে, গ্রাম পর্যায়ের মানুষ নানা কারণে সহজে নমুনা টেস্ট করে না, গ্রামের পরিবেশ সবুজ ও খোলামেলা এবং উন্মুক্ত পরিবেশে বসবাস করে। ফলে শহরের তুলনায় গ্রামে আক্রান্ত ও মৃত্যু কম।

জানা যায়, চট্টগ্রামে ইতোমধ্যে সুরক্ষা অ্যাপসে ভ্যাকসিনের জন্য নিবন্ধন করেছেন ৫৫ লাখ ৩১ হাজার ১৫১ জন। এর মধ্যে প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ৭২ লাখ ২৯ হাজার ১৯৬ জন, দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৬৭ লাখ ৮৮ হাজার ১১২ জন ও বুস্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ১৭ লাখ ৪৩ হাজার ১৭৬ জন। চট্টগ্রামে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে মোট শয্যা আছে ৩ হাজার ২০৪টি। এর মধ্যে সরকারি ১ হাজার ১৪৪টি ও বেসরকারি ২ হাজার ৬০টি। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা আছে ২৬টি, হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা আছে ১৯৫টি, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর আছে ১১৬টি, আইসিইউ শয্যা আছে ২৭৫টি এবং ভেন্টিলেটর আছে ৬৮টি।        

সর্বশেষ খবর