মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

হুমায়ূন আহমেদের দশম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

হুমায়ূন আহমেদের দশম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

আজ ১৯ জুলাই নন্দিত কলম জাদুকর হুমায়ূন আহমেদের দশম মৃত্যুবার্ষিকী। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ক্যান্সারের চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১২ সালের এই দিনে না-ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি। নন্দিত এ কলম জাদুকরের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ গাজীপুরের নুহাশপল্লীতে তাঁর কবরে ফুলেল শ্রদ্ধাসহ নানা আয়োজন থাকবে। বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনও আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিলসহ নানা আয়োজনে প্রয়াত এ কথাসাহিত্যিককে স্মরণ করবে। এ ছাড়া বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত হবে হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিনের নানা আয়োজন।

১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ূন আহমেদ। তাঁর ডাকনাম কাজল। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ও মা আয়েশা ফয়েজের প্রথম সন্তান তিনি। বাবা ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা আর মা গৃহিণী। তাঁরা তিন ভাই, দুই বোন। কথাসাহিত্যিক মুহম্মদ জাফর ইকবাল তাঁর ছোট ভাই। সবার ছোট ভাই আহসান হাবীব নামকরা কার্টুনিস্ট ও রম্যলেখক। হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন একাধারে কথাসাহিত্যিক, গল্পকার, গীতিকার, নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি বাংলা সাহিত্যে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির জনকও। ১৯৭২ সালে প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ প্রকাশের পরই তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। উপন্যাসে ও নাটকে তাঁর সৃষ্ট চরিত্রগুলো বিশেষ করে ‘হিমু’, ‘মিসির আলি’, ‘শুভ্র’ তরুণ-তরুণীদের কাছে হয়ে ওঠে অনুকরণীয়। তাঁর পরিচালিত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- ‘আগুনের পরশমণি’, ‘শ্যামল ছায়া’, শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘দুই দুয়ারী’, ‘চন্দ্রকথা’, ‘নয় নম্বর বিপৎসংকেত’, ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ প্রভৃতি।

বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৯৪ সালে ‘একুশে পদক’ লাভ করেন। এ ছাড়া বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কার (১৯৮৮) লাভ করেন। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে তাঁর ক্যান্সার ধরা পড়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যান। সেখানে ২০১২ সালের ১৬ জুলাই তিনি চলে যান লাইফ সাপোর্টে। ১৯ জুলাই বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টায় তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ২৩ জুলাই দেশে ফিরিয়ে আনা হয় তাঁর লাশ। ২৪ জুলাই তাঁকে দাফন করা হয় তাঁর গড়ে তোলা গাজীপুরের নুহাশপল্লীর লিচুতলায়।

নেত্রকোনায় ‘স্মরণ কথন’ : প্রতি বছরের মতো এবারও কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক ড. হুমায়ূন আহমেদের দশম প্রয়াণ দিবসে ‘স্মরণ কথন’-এর আয়োজন করেছে হিমু পাঠক আড্ডা। প্রিয় লেখকের জন্মস্থান নিজ জেলায় হুমায়ূনভক্তরা লেখকের প্রয়াণের দিন থেকেই স্মরণ করে যাচ্ছেন প্রতি বছর। এ উপলক্ষে আজ নেত্রকোনা জেলা প্রেস ক্লাবের ছাদে সকাল সাড়ে ১০টায় কালো ব্যাজ ধারণ, ১১টায় স্মরণ কথনে লেখকের জীবনী নিয়ে আলোকপাত করবেন বক্তারা।

অন্যদিকে লেখকের জন্মভিটা মোহনগঞ্জ উপজেলার শেখবাড়ি নানাবাড়িতে দোয়া ও কোরআনখানি এবং পৈতৃকভিটা কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর নিজ গ্রামে প্রতিষ্ঠিত শহীদস্মৃতি বিদ্যাপীঠে দোয়া, কোরআনখানি ও শোকর‌্যালি হবে।

এদিকে এমন একজন লেখকের অকালপ্রয়াণে সাহিত্যাঙ্গনে অনেকটা ভাটা পড়েছে বলে মন্তব্য করেন বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রাবন্ধিক অধ্যাপক যতীন সরকার।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর