পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সিলেটে দিনভর দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে গণসমাবেশে আসা বিএনপি নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষকে। সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ও পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ গতকাল সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ ধর্মঘট আহ্বান করেছিল। এ ছাড়া সিলেট বিভাগের বাকি তিন জেলায় শুক্রবার থেকে দুই দিনের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা।
পরিবহন ধর্মঘটের কারণে গতকাল সকালে অনেকে বাস টার্মিনালে গিয়ে ফিরে আসেন। সিলেটে থেকে দূরপাল্লার ও আঞ্চলিক মহাসড়কে কোনো বাস চলাচল করেনি। বাসের পাশাপাশি অটোরিকশাসহ সব ধরনের যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে দিনভর সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তির শিকার হয়। বাস না পেয়ে যাত্রীরা রেলওয়ে স্টেশনে ভিড় করেন।
এদিকে, পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সিলেট জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপি নেতা-কর্মীরা মাইক্রোবাস, ট্রাক ও পিকআপ ভাড়া করে গণসমাবেশে যোগ দিতে আসেন। সিলেট বিভাগের বাইরের বিভিন্ন জেলা থেকেও নেতা-কর্মীরা মাইক্রোবাস ভাড়া করে আসেন। সুনামগঞ্জ থেকে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী নৌপথে নৌকা ও ট্রলার ভাড়া করে সিলেট এসে পৌঁছান। সুনামগঞ্জের ছাতক থেকে আসা বিএনপি কর্মী সালাহ উদ্দিন জানান, পরিবহন ধর্মঘটের কারণে ছাতক থেকে কোনো বাস আসেনি। যাত্রীবাহী সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তাই বিকল্প পন্থা হিসেবে একটি ট্রলারে করে ছাতক থেকে অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী সিলেটে এসেছেন। মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ভাড়া করে সমাবেশে আসা নেতা-কর্মীরা জানান, রাস্তায় তাদের পুলিশি তল্লাশির মুখে পড়তে হয়েছে। তবে কোথাও হয়রানির শিকার হতে হয়নি। পুলিশ গাড়ি পরীক্ষা করে তাদের ছেড়ে দিয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সিলেট মহানগরীর ১৯টি পয়েন্টে মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে চৌকি বসানো হয়। সন্দেহভাজন কোনো যানবাহন মনে হলে সেটা আটকে তল্লাশি করতে দেখা গেছে। তবে সমাবেশে আসা নেতা-কর্মীদের কোথাও নামিয়ে দেওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। হবিগঞ্জ থেকে আসা বিএনপি কর্মী শেখ মনির হোসেন জানান, হবিগঞ্জ থেকে বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী সাতটি মাইক্রোবাসে সিলেটে এসেছেন। রাস্তায় একস্থানে পুলিশ তাদের গাড়ি আটকে তল্লাশি করেছে। পরে কোনো কিছু না পেয়ে মাইক্রোবাসগুলো ছেড়ে দিয়েছে।
এদিকে, ধর্মঘটে কোথাও পরিবহন শ্রমিকদের পিকেটিং করতে দেখা যায়নি। সিলেট নগর ও নগরের বাইরে প্রাইভেট গাড়ি ও যাত্রীবাহী সিএনজি অটোরিকশা চলতে দেখা গেছে। তবে যাত্রীবাহী যানবাহনের সংখ্যা খুবই কম ছিল।