রবিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

কেডিএ এভিনিউ, এক সড়কেই এত সংকট!

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

কেডিএ এভিনিউ, এক সড়কেই এত সংকট!

খুলনার বাণিজ্যিক এলাকার অন্যতম সড়ক কেডিএ এভিনিউ। শহরের বুকে সুন্দরবনের ছোঁয়া দিতে একসময় বাঘ, হরিণ আর নান্দনিক স্থাপত্যশৈলী দিয়ে সড়কটির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও নজরদারির অভাবে এখন সেই সড়ক দখল করে অবৈধ গাড়ি পার্কিং, রেন্ট-এ কারের ব্যবসা, ময়লার ডাম্পিং পয়েন্ট, ফুটপাত দখল ও সড়কে অস্থায়ী দোকান গড়ে উঠেছে।

নিয়মিত পরিচ্ছন্ন কাজ না হওয়ায় চারপাশে ধুলোবালির আস্তরণ, ডাম্পিং পয়েন্টের ময়লার দুর্গন্ধ ও ফুটপাত বেদখলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় পথচারীদের। যেখানে-সেখানে পার্কিং ও এলোমেলো ইজিবাইক চলাচলে দুর্ভোগ বাড়ে যানজটে। জানা যায়, নগরীর ব্যস্ততম শিববাড়ী মোড় থেকে রয়েল হোটেলের মোড় পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় দেড় কিলোমিটার। সর্বশেষ ২০২১ সালে ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে কেডিএ এভিনিউ ও আবু আহমেদ সড়কে রাস্তা ড্রেন ফুটপাত পুনর্নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এর মধ্যে শেখপাড়া হাতিলের সামনে ডাম্পিং পয়েন্টে স্কাভেটর দিয়ে ময়লা-আবর্জনা উঠানোর কারণে সড়কের একপাশে গর্ত তৈরি হয়েছে। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত কখনো ময়লা ফেলা হচ্ছে আবার কখনো তা ট্রাকে উঠানো হচ্ছে। সড়কের বেস্ট ইলেকট্রনিকস শোরুমের পাশে ও ময়লাপোতা-সাত রাস্তার মোড়ের মাঝামাঝি বাংলাদেশ ব্যাংক স্টাফ কোয়ার্টারের কাছেও একইভাবে সড়কে ময়লা-আবর্জন রাখা হয়। এ ছাড়া কেসিসির ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের বাড়ির কাছে নির্মাণাধীন একটি ভবনের ইট, খোয়া, বালু, সিমেন্ট সড়কে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। শিববাড়ি মোড়ের পুলিশ বক্সের সামনে যাত্রী উঠানোর জন্য এলোমেলো ইজিবাইক, ফুটপাত ছাড়িয়ে সড়কে অস্থায়ী দোকান, তেঁতুলতলার মোড়ের সুউচ্চ ভবনগুলোতে কোনো পার্কিং ব্যবস্থা না থাকায় ব্যাংক, বীমা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও শোরুমগুলোতে আসা গ্রাহকের গাড়ি সড়কের ওপরে পার্কিং করা হয়। সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সাতরাস্তা মোড়ে বাস কাউন্টার ও হোটেলগুলোর সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহন রাস্তা দখল করে দাঁড়িয়ে থাকে। বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ্জামান বলেন, মহানগরীর অধিকাংশ সড়কে বিশৃঙ্খলার একই চিত্র। কেডিএর চোখের সামনে নীতিমালা না মেনে সুউচ্চ ভবন গড়ে উঠছে। যেখানে কোনো পার্কিং ব্যবস্থা বা মনিটরিং নেই। প্রধান সড়কে ময়লার ডাম্পিং পয়েন্ট গড়ে উঠেছে।

অবৈধ পার্কিং, ফুটপাত দখলের কারণে ভোগান্তি বাড়ছে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা নেই।

লক্ষ্য করা যায়, ময়লাপোতা থেকে সাতরাস্তার মোড় পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে অসংখ্য রেন্ট-এ কার অফিস গড়ে উঠেছে। সড়ক দখল করে সারি সারি প্রাইভেট কার মাইক্রোবাস ট্রাক ভাড়ার অপেক্ষায় থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। নাগরিক নেতারা বলছেন, শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে পরিকল্পনা নিয়ে সড়কে অবৈধ পার্কিং ও ফুটপাত দখল উচ্ছেদ, সড়কে নির্মাণ সামগ্রী রাখলে ব্যবস্থা, নির্দিষ্ট রুট তৈরি করে গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও প্রধান সড়ক থেকে ময়লার ডাম্পিং পয়েন্ট সরিয়ে ফেলা জরুরি।

কেসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আবদুল আজিজ জানান, ৩৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বর্জ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় ডাম্পিং পয়েন্টের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। জমি পাওয়া গেলে প্রধান সড়ক থেকে ডাম্পিং পয়েন্টগুলো সরিয়ে নেওয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর