মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

মামলা গ্রেফতারে উদ্বেগ খুলনা বিএনপিতে

দুই দিনে গ্রেফতার ৪৬, নগর ও জেলার সদস্য সচিবসহ ৮০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

মামলা গ্রেফতারে উদ্বেগ খুলনা বিএনপিতে

২২ অক্টোবর খুলনায় বিভাগীয় গণসমাবেশের পর থেকেই কোণঠাসা অবস্থান থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছিল বিএনপি। রাজপথে কর্মীদের মনোবল চাঙা রাখতে দেওয়া হয় ধারাবাহিক কর্মসূচি। কিন্তু হঠাৎ করে পুলিশের শক্ত অবস্থানে এ মুহূর্তে ‘ব্যাকফুটে’ রয়েছেন নেতারা। ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকায় গণসমাবেশ পর্যন্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখতে চান তারা। জানা যায়, খুলনায় গত দুই দিনে বিএনপির ৪৬ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া বিএনপির মহানগর সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন ও জেলা সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পিসহ ৮০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সদর থানা পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে খুলনার টেলিকমিউনিকেশন ভবন ধ্বংসের চেষ্টা ও সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক নাশকতার অভিযোগ আনা হয়েছে। ৪ ডিসেম্বর রাতে খুলনা সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক শাহীন কবির বাদী হয়ে এ মামলা করেন। এতে বলা হয়, ৩ ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে আসামিরা খুলনার টেলিকমিউনিকেশন ভবন কেপিআই ধ্বংসের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতি সাধন ও নাশকতার উদ্দেশ্যে সমবেত হয়। খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান আল মামুন জানান, ঘটনাস্থল থেকে ককটেলসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। তবে মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা বলেন, ৩ ডিসেম্বর রাতে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। ‘গায়েবি ঘটনা’ উল্লেখ করে নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ বিশেষ অভিযানের নামে নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করছে। বাড়িতে না পেলে পরিবারের সদস্যদের ভয়ভীতি, হয়রানি করছে। পুলিশের এ আচরণে তৃণমূলে উদ্বেগ ছড়াচ্ছে। কিন্তু কেউ আতংকিত নয়। যে কোনো মূল্যে কেন্দ্রের ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়নে নেতা-কর্মীরা মুখিয়ে আছেন। জানা যায়, এর আগে ২২ অক্টোবর গণসমাবেশের পর খুলনায় তিনটি মামলায় কয়েক শ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হলেও তৃণমূলে শক্ত অবস্থান গড়ে তোলে বিএনপি। ওয়ার্ড থানা পর্যায়ের কমিটি গঠনের পাশাপাশি অঙ্গসংগঠনে যুব দলের থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটি গঠন, মহিলা দলের কর্মী সভা, পেশাজীবীদের মতবিনিময়, ছাত্রদলের মশাল মিছিল, শ্রমিক দলের বিভাগীয় প্রতিনিধি সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে দলটি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, খুলনায় ২২ অক্টোবর বিভাগীয় গণসমাবেশের পর থেকেই তৃণমূলে প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে বিএনপি। দলের অভ্যন্তরীণ দ্বিধাবিভক্তি ও হামলা-মামলার পরও প্রতিটি কর্মসূচিতে নেতা-কর্মীরা সক্রিয় অংশগ্রহণ করছেন। বিএনপির মহানগর সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন বলেন, সরকার বিএনপি এবং অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে মিথ্যা মামলা গ্রেফতার অভিযান চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, হামলা-মামলা দিয়ে ভয় দেখিয়ে জনতার আন্দোলনকে দমন করা যায় না। রাজপথে বিএনপি এখন অনেক বেশি সংগঠিত ও শক্তিশালী। দলকে আরও সক্রিয় করতে অঙ্গসংগঠনের কমিটি গঠন করা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর