রবিবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

জরিমানার ক্ষতি পোষাতে দ্বিগুণ ভেজাল গুড় তৈরি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

জরিমানার ক্ষতি পোষাতে দ্বিগুণ ভেজাল গুড় তৈরি

রাজশাহী ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায়ের পর আবারও শুরু হয়েছে ভেজাল গুড় তৈরি। বরং জরিমানার এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তারা ভেজালের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ আছে।

এলাকাবাসী জানান, কয়েক দিন আগে র‌্যাব-৫ ও জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের যৌথ অভিযানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ভেজাল গুড় তৈরি ও বিক্রির দায়ে চারঘাট এলাকায় ভেজাল গুড় জব্দ, ধ্বংস ও তৈরির সঙ্গে জড়িতদের জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া ভেজাল গুড়, গুড় তৈরির কাজে ব্যবহৃত চিনির সিরা, ক্ষতিকর রং, হাইড্রোজেন জব্দ করে ধ্বংস করে। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কোনো রকম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ছাড়াই আগের জায়গায়, আগের মতোই গুড় তৈরি করছেন তারা। জমি থেকে কেটে এনে বাড়ির পাশেই জমা করে রাখা হয়েছে মণকে মণ আখ। সেগুলো পরিষ্কার না করেই ময়লা খোসাসহ বিদ্যুৎচালিত মাড়াইকলে মাড়াই করা হচ্ছে। আখ থেকে বের হয়ে সে রসগুলো আগের মতোই সিমেন্টের তৈরি একটি নোংরা পাত্রে জমা হচ্ছে। সেখান থেকে রসগুলো উঠিয়ে খোলা বড় কড়াইয়ে জ¦াল দেওয়া হচ্ছে। বড় চুলার পাশেই রাখা হয়েছে ক্ষতিকর সোডার পাত্র। রসের ওপর ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। চারঘাট উপজেলার মানিক শেখ বলেন, আখ মাড়াই করেই তিনি গুড় তৈরি করছেন। চলতি মৌসুমে জরিমানা দিয়েছেন স্বীকার করে তিনি বলেন, কেউ তাদের গুড় তৈরি বন্ধ করতে বলেনি। তাই তারা এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। জরিমানার টাকা তুলতে হলে এখন একটু বেশি করে গুড় তৈরি করতে হবে বলেও জানান তিনি।

বাঘা উপজেলার আড়ানী গ্রামের আবদুর রহিম ও রতন হাওলাদার বলেন, বছরের পর বছর ধরে তারা এ ব্যবসা করে আসছেন। অনেকেই এসে সেলামি নিয়ে চলে যান। কিন্তু র‌্যাব এলে জরিমানা দিতে হয়। তাও বছরে একবার। গত বছরও দিয়েছেন কিন্তু তারা চলে গেলে আর কোনো সমস্যা হয় না। ২০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়া কামাল হোসেন মাড়াই বন্ধ রাখলেও তার যন্ত্রপাতি, মাড়াই মেশিন, মণকে মণ আখ ঘটনাস্থলেই পড়ে আছে। পরিস্থিতি সামলে আবার শুরু করবেন বলে জানান।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাসুম আলী জানান, অভিযানের সময় তাদের গুড় তৈরি বন্ধ করতে বলা হয়নি ঠিকই কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, খেত থেকে আখ তুলে এনে হাঁসুয়া দিয়ে খোসা ছড়িয়ে নিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া মাড়াই মেশিন থেকে যেখানে আখের রস পড়ে সেখানে সিমেন্টের বদলে প্লাস্টিকের পরিষ্কার পাত্র রাখতে বলা হয়েছে। গুড়ে ক্ষতিকর রং, চিনি, সোডা মেশাতে নিষেধ করা হয়েছে। এসব শর্ত না মানলে আবার অভিযান পরিচালনা করা হবে বলেও তিনি জানান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর