মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

আবাসন পাচ্ছে তেলেগু সম্প্র্রদায়

♦ ১০টি ১০ তলা ভবন নির্মাণ হবে ♦ অস্থায়ী আবাসনের জন্য জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ♦ নতুন ঘর নির্মাণের সামর্থ্য নেই তাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

আবাসন পাচ্ছে তেলেগু সম্প্র্রদায়

রাজধানীর ধলপুরে তেলেগু সম্প্রদায়ের অস্বাস্থ্যকর ওই আবাসনস্থল ভেঙে গড়ে উঠবে নতুন নতুন ভবন -বাংলাদেশ প্রতিদিন

রাজধানীর ধলপুরে আউটফল তেলেগু কলোনির সব বাসিন্দা আবাসনের আওতায় আসছে। ধলপুরের ১৪ নম্বর আউটফল ও সিটি পল্লীতে ১২ ফেব্রুয়ারি উচ্ছেদ অভিযান চালায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এ সময় ৫০টি বাড়িসহ প্রায় হাজারখানেক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। ওই সময় সেখান থেকে আবাসন হারানো সিটি করপোরেশনের ক্ষতিগ্রস্ত কর্মচারীরাও এই আবাসনের আওতায় আসছেন। উদ্ধার হওয়া স্থানে তাদের আবাসনের জন্য ১০টি ১০ তলা ভবন নির্মাণ করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। উচ্ছেদ অভিযানে তেলেগু সম্প্রদায়ের কাউকে উচ্ছেদ করা হয়নি। এই সম্প্রদায়ের ১৩০ পরিবারকে আপতত অস্থায়ীভাবে থাকার জায়গা বরাদ্দ দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। তবে তেলেগু সম্প্রদায়ের লোকজন বলছেন, নতুন ঠিকানায় ঘর নির্মাণের সামর্থ্য তাদের কারও নেই। এ জন্য সিটি করপোরেশনের সহযোগিতা প্রয়োজন।

ডিএসসিসি সূত্রে জানা যায়, ধলপুরের ১৪ নম্বর আউটফলে প্রায় ১৫ একর জমি রয়েছে। যা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছিল অনেকে। ১২ ফেব্রুয়ারি এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করে সংস্থাটি। এই ১৫ একর জায়গার মধ্যে ১০ একর জায়গায় ডিএসসিসির পরিবহন পুলের অত্যাধুনিক গ্যারেজ নির্মাণ করা হবে। আর বাকি ৫ একর জায়গায় পরিচ্ছন্নকর্মীদের বাসস্থান তৈরি করা হবে। সেখানে তেলেগু সম্প্রদায়ের লোকজনও থাকবে। এরমধ্যে তেলেগু সম্প্রদায়ের যারা সিটি করপোরেশনের কর্মচারী তাদের পরিচ্ছন্নকর্মী নিবাসে আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিচ্ছন্নকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ধলপুরের ১৪ নম্বর আউটফল এলাকাটি স্থানীয়দের কাছে মেথর পট্টি হিসেবে পরিচিত। যারা সিটি করপোরেশনে চাকরি করে তাদের আবাসনের ব্যবস্থা করেছে ডিএসসিসি। বাকিদের উচ্ছেদ করেছে সংস্থাটি। তবে তেলেগু সম্প্রদায়ের কলোনি উচ্ছেদ করা হয়নি। তাদের জন্য বরাদ্দ স্থানে দ্রুত চলে যেতে বলেছে সংস্থাটি। তাই তেলেগু সম্প্রদায়ের লোকজন মালামাল সরিয়ে নিচ্ছে। এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. রাসেল সাবরিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, তেলেগু সম্প্রদায়ের কাউকে তো জোর করে উচ্ছেদ করা হচ্ছে না। সেখানে সিটি করপোরেশনের কর্মী যারা আছে, তাদের ফ্ল্যাট দেওয়া হয়েছে। আর বাকি যারা আছে, তাদের আমরা উচ্ছেদ করব না। তাদের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা হচ্ছে। সেখানে তাদের জন্য জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, শুধু তেলেগু সম্প্রদায় নয়, সিটি পল্লী ও ১৪ নম্বর আউটফল কলোনিতে বসবাসকারী সিটি করপোরেশনের কর্মীদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।  সেখানে ১০টি ১০ তলা আবাসিক ভবন তৈরি করা হবে। সেখানে তেলেগু সম্প্রদায়সহ সিটি করপোরেশনের কর্মীরা থাকবে।

গতকাল সরেজমিন দেখা গেছে, ময়লা পানির মধ্যে কেউ কেউ ঘরের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। কেউ আবার কর্মী লাগিয়ে ঘরের দেয়াল থেকে ইট খুলে নিচ্ছেন। আবার অনেকে ঘরের টিন খুলে নিচ্ছেন। অনেককে নতুন করে ঘর নির্মাণ করতে দেখা গেছে তাদের জন্য বরাদ্দ জায়গায়।

তেলেগু বাসিন্দা জ্যাকব জানান, কলোনিজুড়ে হাঁটু সমান ময়লা পানি। এর মধ্যে খাবার পানি সরবরাহ কমেছে। অনেকে মালপত্র সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। এই পরিস্থিতির মধ্যে সবকিছু ভেঙে নতুন জমিতে ঘর নির্মাণের সাধ্য কারও নেই। প্রতিটি ঘর নির্মাণ করতে কমপক্ষে ৬০-৭০ হাজার টাকা লাগবে। এত টাকা কলোনির কারোর নেই। তাই আমরা অনুরোধ জানাচ্ছি, টিনের ঘর হলেও যেন কর্তৃপক্ষ আমাদের তুলে দেয়।

এ বিষয়ে তেলেগু কমিউনিটির সভাপতি কামাল সরদার বলেন, ধলপুর আউটফল তেলেগু কলোনিতে মোট ১৩০টি পরিবার বসবাস করে। দীর্ঘ ৩২ বছর এখানে আমরা বসবাস করে আসছি। এখন সিটি করপোরেশন আমাদের সরিয়ে পাশে অস্থায়ীভাবে থাকার জন্য অনুমতি দিয়েছে। তবে মেয়র আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন, আমাদের জন্য স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করবেন।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর