বুধবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

সামাজিক মাধ্যমে জাল টাকার বাণিজ্য দুজন গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাল টাকা তৈরি ও বিক্রির অভিযোগে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের গোড়ান শান্তিপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার বিকালে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন আল আমিন (২২) ও কাশেম আলী (২২)। এ সময় আল আমিনের ভাড়া বাসা থেকে ল্যাপটপ ও প্রিন্টার জব্দ করা হয়। খিলগাঁও থানা পুলিশ জানায়, চক্রের সদস্যরা জাল টাকাকে প্রোডাক্ট বা মাল হিসেবে ডাকে। ৫০ হাজারের বান্ডিল বিক্রি করেন ১১ হাজার টাকায়। এ চক্রের কয়েকজন সদস্যকে চিহ্নিত করা গেছে। গতকাল দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) কে এন রায় নিয়তি জানান, জাল টাকা তৈরি চক্রের হোতা আল আমিন। এ টাকা কেনার জন্য কাশেম আলী গাজীপুর থেকে আল আমিনের কাছে আসেন।

তাদের যোগাযোগ হয় ফেসবুকের মাধ্যমে। তাদের দেওয়া তথ্য-উপাত্ত ও গোপন তদন্তে জানা যায়, ফেসবুকে ফেক আইডির মাধ্যমে গ্রুপ খোলা হয়। অর্থাৎ আইডি খোলার সময় ভুয়া মোবাইল ফোন নম্বর, ভুয়া ই-মেইল ব্যবহার করা হয়, যাতে এ আইডি ডিটেক্ট হলেও তাদের কেউ চিহ্নিত করতে না পারে। গ্রুপ খোলা হয়ে গেলে ক্রেতার খোঁজে প্রচার-প্রচারণা বাড়াতে থাকে। সেখানে এসে যোগ দেন এ ধরনের অসৎ ব্যবসায় ইচ্ছুক উচ্চাকাক্সক্ষী কিছু যুবক। গ্রুপের কমেন্টে প্রাথমিক কথাবার্তা হলে আরও যোগাযোগ বাড়াতে তারা মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামের মতো যোগাযোগ অ্যাপসগুলোর সহায়তা নেয়। এরপর শুরু হয় তাদের দরদাম ও কেনাবেচা। জাল টাকাকে তারা ডাকে বিভিন্ন নামে- যেমন প্রোডাক্ট, মাল বা প্যাকেট। প্রোডাক্ট ভালো হলে মার্কেটে তৈরিকারকের বিশ্বস্ততা বাড়তে থাকে। একসময় পুরনো কাস্টমাররাই প্রোডাক্টের নতুন কাস্টমার নিয়ে আসে।

পুলিশ বলছে, প্রাথমিক তদন্তে তাদের এ সাপ্লাই চেইনের কয়েকটি ধাপ চিহ্নিত হয়েছে। তৈরিকারকের কাছ থেকে পাইকারি বা খুচরা বিক্রেতার কাছে পৌঁছায়। এতে তৈরিকারক অধিক পরিচিতি হওয়ার ঝুঁকি থেকে নিজেকে কিছুটা রক্ষা করতে পারেন। প্রথম দিকে পাইকারি ক্রেতারা সরাসরি প্রোডাক্ট গ্রহণ করলেও বিশ্বস্ততা বাড়লে বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসের সহায়তায় বিলি করতে থাকেন। বেচাকেনা বাড়াতে নোটগুলো খুবই সুলভ মূল্যে বাজারে ছাড়ে তারা। যেমন ১০ হাজার টাকার এক বান্ডিল ১৮০০ টাকা। ৫০ হাজার টাকার এক বান্ডিল প্রোডাক্ট ১১ হাজার টাকা। পুলিশের নজর এড়াতে ছোট নোটকেই টার্গেট করেছে এরা। কারণ ছোট নোটে অভিযোগ দেওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। এ ছাড়া জাল নোটগুলোকে স্বাচ্ছন্দ্যে চালিয়ে দেওয়ার জন্য রাতে বিনিময় করার পরামর্শ দেয় তারা। তাৎক্ষণিকভাবে হাতেনাতে ধরা পড়ার ঝুঁকি এড়াতে তারা অপেক্ষাকৃত কম আয়ের মানুষকে টার্গেট করে। ঈদুল ফিতরের পর ভারত থেকে উন্নত মানের সিকিউরিটি পেপার এনে আপডেট ভার্সনের জাল টাকা প্রিন্ট করার পরিকল্পনা ছিল তাদের।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর