শুক্রবার, ২ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা
খুলনা

নানা সমীকরণ মেলাতে ব্যস্ত প্রার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

নানা সমীকরণ মেলাতে ব্যস্ত প্রার্থীরা

খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে ততই বিরামহীন প্রচারণা চালাচ্ছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। জ্যৈষ্ঠের প্রখর রোদ উপেক্ষা করে ক্লান্তিহীন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে মন জয়ের চেষ্টা করছেন তাদের। সেই সঙ্গে ভোটে বিজয়ী হতে নানা সমীকরণ মেলাচ্ছেন গণসংযোগে ব্যস্ত প্রার্থীরা।

ভোটারদের সহযোগিতা চান খালেক : আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালকুদার আবদুল খালেক নগরীর বড়বাজার ও আশপাশ এলাকায় গতকাল গণসংযোগ করেন। তিনি খুলনার উন্নয়নে ভোটারদের সহযোগিতা কামনা করেন। বলেন, সিটি নির্বাচনের ওপর দেশের ভাবমূর্তি নির্ভর করছে। এ নির্বাচনে আমরা কেন্দ্রে ৬০ থেকে ৭০ পার্সেন্ট ভোটারের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে কাজ করছি। তিনি বলেন, সবার সহযোগিতায় খুলনাকে পরিচ্ছন্ন সুন্দর তিলোত্তমা নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ১২ জুন নির্বাচনে ভোটাররা নৌকা প্রতীকে ভোট দেবেন সেই প্রত্যাশা করি। তালুকদার খালেক বলেন, কাজের স্বার্থে, খুলনার উন্নয়নের স্বার্থে সবার দোয়া চাই, সহযোগিতা চাই। তিনি বলেন, নগরীর এম এ বারী সড়কের গল্লামারী থেকে দৌলতপুর পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। জলিল সরণিতে কাজ হয়েছে, খালিশপুরে বিআইডিসি রোড সংস্কার কাজে ৬১ কোটি টাকার টেন্ডার দেওয়া হয়েছে।

চলমান প্রকল্পের কাজ শেষ হলে খুলনা নগরীর চেহারা বদলে যাবে।

নাগরিক সেবা প্রতিষ্ঠায় কাজ করবেন আউয়াল : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী আবদুল আউয়াল বলেছেন, হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের পরও সিটি করপোরেশনে কাক্সিক্ষত উন্নয়ন হলো না কেন? বারবার মুখরোচক স্লোগানের ধোঁকায় আমরা কি আবারও ভোগান্তিতে পড়ব?

তিনি বলেন, খুলনা নগরীর দুরবস্থার জন্য কারা দায়ী তাদের চিহ্নিত করতে হবে। তাদের ভোটের মাধ্যমে বয়কট করতে হবে। আবদুল আউয়াল গতকাল সদর থানার রূপসা মাছবাজার, নতুন বাজার, পিটিআই মোড়, জোড়াকল বাজার, রূপসা ট্রাফিক মোড়, নতুন বাজার লঞ্চঘাট, ১ নম্বর কাস্টমস ঘাট, সাউথ সেন্ট্রাল রোড এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভা করেন।

তিনি বলেন, খুলনা সিটির দুরবস্থার মূল কারণ দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, অপরিকল্পিত কর্মকান্ড ও উন্নয়নমূলক কাজে ক্ষমতাসীন দলের অশুভ প্রভাব। এ কারণে উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড টেকসই হয় না। সিটি করপোরেশন আজ একটি অশুভ স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর সিন্ডিকেটে পরিণত হয়েছে। আবদুল আউয়াল বলেন, আমি নির্বাচিত হলে শিল্পনগরী খুলনাকে পরিবেশবান্ধব বাসযোগ্য মহানগরী হিসেবে গড়ে তুলব। ৩১ ওয়ার্ডের প্রতিনিধি নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রতি ওয়ার্ডের জন্য আলাদা পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা করব।

নগর পরিবহন চালু করবেন মধু : কেসিসি নির্বাচনে বিজয়ী হলে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চান জাতীয় পার্টির প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু।

তিনি গতকাল নগরীর টুটপাড়া কবরখানা, টুটপাড়া বাজার, বউবাজারসহ ২৮, ৩০ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ ও পথসভা করেন।

তিনি বলেন, বিগত দিনে মেয়রদের কাজে অনেক ব্যর্থতা রয়েছে। জলাবদ্ধতায় নগরবাসী ভুগছেন। অনেক রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী। বিগত দিনে যে নগর পরিবহন ছিল তা বন্ধ রয়েছে, আমি নির্বাচিত হতে পারলে সবার আগে নগর পরিবহন চালু করব। তিনি ১২ জুন খুলনা সিটি নির্বাচনে ভোটারদের উৎসবমুখর পরিবেশে লাঙল প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।

সবারর সমন্বয়ে উন্নয়ন কাজ করবেন মুশফিক : একক কোনো সিদ্ধান্ত নয়, সবার সমন্বয়ে উন্নয়ন কাজ করতে চান স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান মুশফিক। তিনি বলেন, আমার প্রতীক টেবিলঘড়ি হচ্ছে প্রতিবাদের প্রতীক। আমি নির্বাচিত হলে সবার অংশগ্রহণে নগরবিদদের দিয়ে প্রয়োজন অনুসারে উন্নয়নমূলক কাজ করতে চাই। তিনি গতকাল ১, ২ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারে অংশ নেন। ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, একটিবার মেয়র হিসেবে আমাকে সুযোগ দিলে আমি পরিকল্পিত পরিচ্ছন্ন আধুনিক নগরী হিসেবে খুলনাকে গড়ে তুলব। তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে নেই, তাদের সমর্থকদের ভোট আমি পাব বলে প্রত্যাশা করছি। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগ সমর্থক অনেক ভোটও আমি পাব।’ নির্বাচন সুষ্ঠু হলে তিনি বিজয়ী হবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

সর্বশেষ খবর