রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এখন প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। মেয়র প্রার্থীরা সকালের দিকে প্রচারণায় না থাকলেও কাউন্সিলর প্রার্থীরা সকাল থেকেই ছুটছেন বাড়ি বাড়ি। ভোট গ্রহণের দিন যত এগিয়ে আসছে, প্রার্থীদের ব্যস্ততার পাশাপাশি চলছে আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িক।
রিটার্নিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানান, আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন প্রার্থীকে আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। খুলে ফেলতে বাধ্য করা হয়েছে মেয়র প্রার্থীর বড় মাপের ফেস্টুন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা আচরণবিধি মানাতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় টহল বাড়িয়েছেন। গত চার দিনে কমিশনের কাছে কয়েকটি অভিযোগ জমা পড়েছে। সবগুলো আচরণবিধি লঙ্ঘনের। তাৎক্ষণিক তদন্ত করে সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে গতকাল দুপুরে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন রাজশাহী চেম্বার ভবন সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি বলেন, রাজশাহী শিক্ষাবান্ধব শহর। স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে। তবে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে রাজশাহী উপেক্ষিত, অবহেলিত বলা যায়। রাজশাহীতে প্রচুর পরিমাণ কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন হয়, প্রচুর পরিমাণে মাছ চাষ হয়, পোলট্রি আছে, ডেইরি আছে। রাজশাহী কৃষিপ্রধান অঞ্চল হওয়ায় এখানে সেভাবে শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠেনি। এবার আমি নির্বাচিত হলে রাজশাহীর ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেব। জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন বিকালে নগরীর ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দাসপুকুর, কোর্ট স্টেশন, কাশিয়াডাঙা এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি লাঙলে ভোট চান। তার সঙ্গে জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। শুধু মেয়র প্রার্থীরা নন, এখন কাউন্সিলর প্রার্থীরাও গণসংযোগ বাড়িয়েছেন। প্রতিটি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের কাছে। প্রার্থীদের প্রচারণায় ওয়ার্ডগুলোতে উৎসবের পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে উত্তেজনা ও আতঙ্ক। নগরীর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতিকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন একাধিক হত্যা মামলার আসামি ও তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রুবেল হোসেন। এ নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন মতিউর রহমান মতি। অন্যদিকে রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে র্যাবের গাড়িবহরে হামলার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলা আদালতে বিচারাধীন। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর তৌহিদুল হক সুমনের সমর্থকরা ছুরিকাঘাতে আহত করেছে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আশরাফ বাবুকে। এ ঘটনায় চন্দ্রিমা থানায় দুটি মামলা হয়েছে। ওই ওয়ার্ডে বাড়িঘরে হামলার ঘটনাও ঘটেছে।