একটা সময় কীর্তনখোলা নদীর তীরবর্তী সদর উপজেলার চরবাড়িয়া এলাকায় ছিল কান্না-আহাজারি-আর্তনাদ। প্রতিনিয়ত নদী ভাঙনে সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন অনেক মানুষ। ঘরবাড়ি হারিয়ে বাস্তুহারাও হয়েছেন অনেকে। সেই জনপদে এখন শান্তির সুবাতাস বইছে। ৩৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থায়ী নদী প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করায় এখন আর আর্তনাদ নেই ওই জনপদে। উপরন্তু কীর্তনখোলার প্রতিরক্ষা বাঁধ এখন পরিণত হয়েছে বিনোদন কেন্দ্রে। সরকারি ছুটির দিনসহ বিশেষ উৎসবে লোকারণ্য হয়ে যায় কীর্তনখোলা প্রতিরক্ষা বাঁধে। রেস্টুরেন্টসহ নানা ব্যবসা করে ভালোই দিন যাচ্ছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের। আরও কিছু সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হলে কীর্তনখোলার তীরে বিনোদনপ্রেমীদের পদচারণা বাড়বে বলে ধারণা স্থানীয়দের। জানা যায়, সরকারের চলতি মেয়াদের শুরুর দিকে ৩৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে কীর্তনখোলা নদীর চরবাড়িয়া এলাকায় ৫.৬ কিলোমিটার তীর স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ এবং তীর রক্ষায় নদীর অপর পাশে ৫.৬ কিলোমিটার ড্রেজিং কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। গত প্রায় সাড়ে ৪ বছরে এই উন্নয়ন কাজ প্রায় শেষ। সিসি ব্লক ফেলে নদীর তীর সংরক্ষণ করে স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধ করেছে তারা। একই সঙ্গে ৩০০ কোটি টাকার এই উন্নয়ন কাজ পর্যটনবান্ধব করতে নদীর তীরে স্থাপন করা হয়েছে ৫৬টি বেঞ্চ (বসার স্থান) এবং বাহারি রঙের ৫৬টি বাতি। স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হাসান জানান, কীর্তনখোলার ভাঙনে চরবাড়িয়ার অনেক মানুষ বাস্তুহারা হয়েছে। অনেক মানুষের বাড়িঘর সহায় সম্পদ সব কিছু নদীগর্ভে চলে গেছে।
এখন আর সেই চিত্র নেই। এখন নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করায় স্থানীয় মানুষ স্বস্তিতে আছেন।
নদীর তীরের বাদাম বিক্রেতা মো. কালু জানান, কীর্তনখোলা নদী তীরের প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং মুক্ত বাতাস গ্রহণ করতে বিশেষ উৎসবসহ সরকারি ছুটির দিনে প্রচুর দর্শনার্থীর আগমন ঘটে। নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধ এখন পার্কে পরিণত হয়েছে।বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন বলেন, নদীর তীর সংরক্ষণ কাজটি পর্যটনবান্ধব করার নির্দেশ ছিল পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর। সে অনুযায়ী ৫.৬ কিলোমিটার সংরক্ষিত তীরে ৫৬টি বেঞ্চ এবং ৫৬টি বাহারি রঙের বৈদ্যুতিক বাতির ব্যবস্থা করা হয়েছে।