কোটা আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার বিচারসহ নানা বিষয়ে কথা বলতে আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তার পরিবারের সদস্যরা। এজন্য নিহত সাঈদের বাবা-মা ও ভাই গতকাল সকালেই রংপুরের পীরগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়ে গেছেন। রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশে^র হাসান জানান, আবু সাঈদের পরিবার আগ্রহ প্রকাশ করলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাদের দেখা করার সার্বিক ব্যবস্থা করা হয়েছে। জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন চলার সময় গত ১৬ জুলাই দুপুরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিছিলে অংশ নেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। তিনি এই আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়কও ছিলেন। সেদিন শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাধে। এতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। এ সময় শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার শেল, রাবার বুলেট ও কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে পুলিশ। গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। তাৎক্ষণিকভাবে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আবু সাঈদকে মৃত ঘোষণা করেন।
রংপুরের পীরগঞ্জের বাবনপুর গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে আবু সাঈদ। তিনি ছিলেন দরিদ্র পরিবারের অসহায় মা-বাবার একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সন্তান। প্রবল ইচ্ছাশক্তিতে ৯ ভাইবোনের মধ্যে লেখাপড়া চালিয়ে গেছেন তিনি। অভাবের সংসারে অন্য সন্তানরা লেখাপড়া করতে না পারলেও মেধাবী আবু সাঈদ গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি ও এইচএসসি পাসের পর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন। ওই বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন আবু সাঈদ।