সিলেট-ভারত সীমান্তে কড়াকড়ি চলছে। বাড়ানো হয়েছে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নজরদারিও। এর ফলে ভারত থেকে সীমান্ত পথে গরু আসা প্রায় বন্ধ। স্থানীয়ভাবে কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যাও কম। ঘাটতি রয়েছে প্রায় ২০ শতাংশ পশুর। ফলে এবার সিলেটে কোরবানির পশু সংকটের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কোরবানির পশুর চাহিদা পূরণে এবার সিলেটের ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের।
সিলেট জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সিলেটে এবার কোরবানিযোগ্য পশুর চাহিদা ১ লাখ ২ হাজার ২৭৮টি। এর মধ্যে গরুর চাহিদা ৮০ হাজার, মহিষ ৩ হাজার ৪০২, ছাগল ২৪ হাজার ৪৫৯ ও ভেড়া ৭ হাজার ১৫টি। সিলেটে মহিষ, ছাগল ও ভেড়া চাহিদামাফিক থাকলেও সংকট রয়েছে গরুর। অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এবার সিলেট জেলায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ৬৭ হাজার ৩৪৩টি গরু। চাহিদার তুলনায় কম ১২ হাজার ৬৫৭টি। কোরবানির জন্য প্রস্তুত গরুর মধ্যে ৪৩ হাজার ৮৮২টি ষাঁড়, ১৫ হাজার ২৭৭টি বলদ ও ৮ হাজার ১৮৪টি গাভী রয়েছে।
জানা গেছে, গত ৮ মে থেকে সিলেট সীমান্তের ওপারে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চার জেলায় রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করেছে সেদেশের প্রশাসন। সীমান্তে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ও চোরাচালান রোধে বিজিবিও নজরদারি বাড়িয়েছে। এরপর থেকে সীমান্ত দিয়ে গরু আসা বন্ধ রয়েছে। ফলে প্রতি বছর বৈধ ও অবৈধভাবে সীমান্ত দিয়ে প্রচুর ভারতীয় গরু সিলেটে আসত। কিন্তু এ বছর সীমান্তে কড়াকড়ির কারণে ভারত থেকে গরু আসার সম্ভাবনা দেখছেন না ক্রেতা-বিক্রেতারা।
এদিকে কোরবানির পশুর চাহিদা পূরণে এবার সিলেটের ব্যবসায়ীরা ঝুঁকছেন উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতে। নাটোর, নওগাঁ, বগুড়া ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ ব্যবসায়ীদের কাছে টাকা বিনিয়োগ করে রেখেছেন। এ ছাড়া কুষ্টিয়া, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহ জেলা থেকেও প্রতি বছর ঈদে সিলেটে কোরবানির পশু আসে। এসব জেলার ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন সিলেটের ব্যবসায়ীরা। গরু ব্যবসায়ী আবদুল হাসিব জানান, এবার সীমান্তে কড়াকড়ি থাকায় ভারত থেকে গরু আসার সম্ভাবনা নেই। তাই সিলেটের ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন জেলায় ছুটছেন। ব্যবসায়ীদের আগাম টাকা দিয়ে রাখছেন। এরপরও এবার ঈদে কোরবানির পশুর সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে সিলেট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিজানুর রহমান মিয়া জানান, সিলেটে কোরবানিযোগ্য গরুর কিছু ঘাটতি রয়েছে। তবে ঈদের সময় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা গরু নিয়ে সিলেট আসেন। আশা করা যাচ্ছে এবার ঈদে বাইরের গরু দিয়ে ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে, গরুর সংকট থাকবে না। এ ছাড়া মহিষ, ছাগল ও ভেড়া চাহিদামাফিক রয়েছে বলে জানান তিনি।