প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে করা মামলায় মডেল মেঘনা আলমের জব্দকৃত মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ ডিভাইসে রাষ্ট্রবিরোধী কোনো উপাদান আছে কি না, তা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকা মহানগর হাকিম এম এ আজহারুল ইসলামের আদালত এই আদেশ দেন। এদিকে মেঘনা আদালতে দাবি করেছেন, সৌদি রাষ্ট্রদূত ইশা তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেছিলেন। গতকাল মেঘনা পাসপোর্ট, মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ নিজ জিম্মায় ফেরত পেতে আদালতে আবেদন করেন। আদালতে মেঘনার পক্ষে আইনজীবীরা মেঘনার ব্যক্তিগত আইফোন-১৬ প্রো, ম্যাকবুক, অপো মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ ফেরত পেতে শুনানি করেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হারুন অর রশিদ এসবের বিরোধিতা করে বলেন, আসামি বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্রের কূটনীতিক ও দেশীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন।
এ মামলাটি চাঞ্চল্যকর। আসামি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ দিয়ে কার কার সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রেমের ফাঁদে ফেলেছেন তা তদন্ত হওয়া জরুরি।
এ সময় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে মেঘনা আদালতকে বলেন, ‘আমার সঙ্গে বিভিন্ন রাষ্ট্রদূতের প্রফেশনাল সম্পর্ক রয়েছে। সৌদি রাষ্ট্রদূত ইশা আমাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেছিলেন। আমি যথেষ্ট প্রমাণ দিতে পারব।’ মেঘনা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আমার ওপর নির্ভর করে। আমি ছয়টি মহাদেশে ১০টি আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করেছি এবং নারীদের অধিকার নিয়ে বহু কাজ করেছি। তাই আমার ম্যাকবুক, ল্যাপটপ, মোবাইল ও পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হোক।’
জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, মামলার এজাহারে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে-আসামি মূলত নারীদের ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেইলের কাজ করতেন। এর প্রতিবাদে মেঘনা বলেন, আপনি রাষ্ট্রদূতকে অসম্মান করছেন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। মেঘনা বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত নিরপরাধ।’
শুনানি শেষে আদালত মেঘনা আলমের মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও ম্যাকবুকে রাষ্ট্রবিরোধী কোনো উপাদান আছে কি না, তা তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেন। একই সঙ্গে এসব ডিভাইসের মালিকানা যাচাই করে আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মেঘনা আলম, দেওয়ান সমিরসহ অজ্ঞাত দুই-তিনজন মিলে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্র গড়ে তুলেছেন। তারা বিভিন্ন আকর্ষণীয় ও স্মার্ট মেয়েদের ব্যবহার করে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিক ও দেশীয় ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলতেন। পরে অবৈধ সম্পর্কের সূত্র ধরে বিভিন্ন কৌশলে অর্থ আদায় করতেন এবং সম্মানহানির ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করতেন।