চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক সময়ের চিকুনগুনিয়া পরিস্থিতি জনস্বাস্থ্যের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে গতকাল পর্যন্ত গড়ে প্রতিদিন ৫৯ দশমিক ৮৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তবে সরকারি হাসপাতালে চিকুনগুনিয়া পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। বেসরকারি হাসপাতালেও এই টেস্ট ব্যয়বহুল। ফলে অনেক রোগীই টেস্টের বাইরে থেকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানা যায়। চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ৩১ জুলাই চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হন ৬০ জন, ১ আগস্ট ৪০ জন, ২ আগস্ট ১১২ জন, ৩ আগস্ট ২৬ জন, ৪ আগস্ট ২০ জন এবং ৫ আগস্ট ১০১ জন আক্রান্ত হন।
ছয় দিনে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৩৫৯ জন, যা গড়ে দৈনিক ৫৯ দশমিক ৮৩ জন। চট্টগ্রামে গতকাল পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৩৪৩ জন। তবে সরকারি এ প্রতিবেদনে দৈনিক কতজনের নমুনা টেস্ট করা হচ্ছে, সে হিসাব দেওয়া হচ্ছে না।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন) ডা. এ এস এম লুৎফুল কবির বলেন, হাসপাতাল ও ব্যক্তিগত চেম্বারে জ্বর নিয়ে আসা রোগীদের মধ্যে ৮০ শতাংশই চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত। এবারের বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুকে ছাপিয়ে চিকুনগুনিয়ায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই সবাইকে এডিস মশা থেকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ বছরের এডিস মশা চিকুনগুনিয়ার জীবাণু বহন করছে বেশি। তাই মশার কামড়ে অনেকেই এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে রোগ বাড়লেও পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসায় আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে।
গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে দেখা যায়, জরুরি বিভাগের বাইরে বারান্দায় রোগী ও স্বজনের ব্যাপক ভিড়। তাছাড়া, হাসপাতালের বহির্বিভাগের শিশু ও মহিলা কাউন্টারে ছিল অন্তত ৬০ জনের দীর্ঘ লাইন এবং পুরুষ কাউন্টারে ৬০ থেকে ৭০ জনের দীর্ঘ লাইনের সারি। সবাই চিকিৎসার জন্য টিকিট কাটার অপেক্ষায় রয়েছেন। চিকিৎসা নিতে আসা বাকলিয়ার বাসিন্দা মো. সাইফুদ্দিন বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে জ্বর কমছেই না। তাই আবারও ডাক্তার দেখাতে এসেছি।