কথার অবাধ্য হয়েছে ছাত্র। পড়া করে আসেনি। শিক্ষক তাই শ্রেণিকক্ষে সবার সামনে কান ধরে ওঠাবসা করাচ্ছেন সেই ছাত্রকে। হাতে বেত নিয়ে জিজ্ঞাসা করছেন, 'কি আর হবে এমন? এরপর থেকে পড়া করে আসবি?' আর বেত্রাঘাতের ভয়ে সেই ছাত্রও বাধ্যের মতো ঘাড় নাড়িয়ে সম্মতি জানাচ্ছে।
শ্রেণিকক্ষের সেই ছবিই উঠে এল এবার ভারতের রাস্তায়। লকডাউনের নির্দেশনা না মেনে চলায় রাস্তার উপর কান ধরে ওঠাবসা করাল পুলিশ। এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মালদার ইংলিশ বাজারে। যুবক থেকে বৃদ্ধ, সকলকেই দেখা গেল পুলিশের লাঠির সামনে রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে কান ধরে ওঠাবসা করতে।
গত সোমবার থেকেই কার্ফু জারি হয়েছে কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অধিকানংশ পৌর এলাকায়। কোথাও কোথাও জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। পুলিশ জানিয়েছে, কার্ফুর তোয়াক্কা না করেই রাস্তায় বার হচ্ছে লোকজন। তারা সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করছিলেন। তাই কড়া হতে হয়েছে পুলিশকে। রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে দেখলেই আটক করে জিগজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে সেই ব্যক্তি বা নারীকে। তারপরেই কান ধরে ওঠাবসা।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে মালদার রাস্তায় এমন ওঠাবসার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। টুইটারাইটরা কেউ বলেছেন, নির্দেশনা না মানলে স্কুলের দিন মনে করিয়ে দেবে পুলিশ। আবার কারও মন্তব্য, আমরা সুস্থ থাকলেই দেশ সুস্থ থাকবে। লকডাউন না মানলেই শাস্তি দিক পুলিশ।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ইতিমধ্যেই ভারতজুড়ে ৩০টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৫৪৮টি জেলায় লকডাউন জারি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এসব রাজ্যে লকডাউন চালুর পরেও রাস্তায় নামতে দেখা গেছে অনেক মানুষকে। আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ইতিমধ্যেই ৯০০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। লকডাউনকে কার্যকরী করতে কার্ফু জারি করেছে ভারত সরকার। কোনও কোনও রাজ্যে ১৪৪ ধারাও জারি করা হয়েছে।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আগামী ১৪ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত গোটা ভারতে ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছেন নরেন্দ্র মোদি। নিজের ও পরিবারের সুস্থতার লক্ষ্যে সবাইকে এই ২১ দিন ঘরে থাকার জন্য, দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ