করোনাভাইরাস আতঙ্কের জেরে বুধবার মধ্যরাত থেকে ভারতে ২১ দিনের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ পর্যন্ত গোটা বিশ্বে মোট করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৯৯ হাজার ৩৬৮ জন। এ পর্যন্ত ২২,৩২১ জনের প্রাণ কেড়েছে এই ভাইরাস।
এদিকে, এই ভাইরাসে ভারতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এ পর্যন্ত ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৭১৮ আর মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের।
এই ভাইরাসের কোনো নির্দিষ্ট ওষুধ বা টিকা এখনও আবিষ্কার হয়েনি। তাই সারা বিশ্ব এখনও ফেস মাস্ক আর হ্যান্ড স্যানিটাইজারের উপরেই অনেকটা নির্ভরশীল। কিন্তু ফেস মাস্ক আমাদের কতটা সুরক্ষা দিতে পারছে এই ভাইরাসের প্রকোপ থেকে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুরক্ষা দেওয়া তো পরের কথা, বেশ কিছু ক্ষেত্রে এই মাস্কেই লুকিয়ে রয়েছে বিপদ! বিষয়টা একটু খুলেই বলা যাক।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ড. অরিন্দম বিশ্বাসের মতে, সমস্যাটা মাস্কে নয়, এটি ব্যবহার করার পদ্ধতিতে রয়েছে। তাছাড়া কাদের মাস্ক পরা জরুরি, কখন মাস্ক পরা জরুরি-এই বিষয়গুলিও মাথায় রাখতে হবে। যেমন, চিকিৎসক, নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মীদের N95 মাস্কের প্রয়োজন। কারণ, তারা বেশির ভাগ সময় বিভিন্ন রকম রোগীদের সংস্পর্শে আসেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটান।
কাদের, কোন ধরনের মাস্ক পরা জরুরি:
১) সাধারণ মানুষ বেশিক্ষণ N95 মাস্ক পরে থাকতে পারবেন না। কারণ, এতে তাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হতে পারে।
২) সার্জিক্যাল মাস্ক পরে করোনাভাইরাস ঠেকানো সম্ভব নয়। তবে যাদের সর্দি, হাঁচি-কাশি হয়েছে তারা নিজের জন্য নয়, অন্যের শরীরে যাতে কোনো রকম সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য সার্জিক্যাল মাস্ক পরতে পারেন।
৩) যে ব্যক্তি কোনো রকম সংক্রমণের ফলে হাঁচি-কাশি দিচ্ছেন, তিনি যেমন ফেস মাস্ক ব্যবহার করবেন, তেমনই যে বা যারা ওই ব্যক্তির কাছাকাছি রয়েছেন তাদেরও ফেস মাস্ক ব্যবহার উচিৎ।
৪) ব্রঙ্কাইটিশ, হাঁপানির মতো সমস্যা যাদের রয়েছে, যাদের জ্বর, সর্দি-কাশি হয়েছে তাদের অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করা উচিৎ।
৫) বিপদ এড়াতে যে কোনো দ্বিস্তর, তৃস্তর বিশিষ্ট কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার করা যেতেই পারে।
মাস্ক থেকে কখন সংক্রমণে ঝুঁকি থাকে:
১) একটা বিষয় মাথায় রাখা দরকার। যে কোনো মাস্ক পরার বা খোলার সময় হাত পরিষ্কার রাখা জরুরি। না হলে, হাতে লেগে থাকা ময়লা, রোগ-জীবানু মাস্কে লেগে যাবে এবং বাড়বে সংক্রমণে ঝুঁকি। তাই আগাম সতর্কতা হিসেবে মাস্ক পরার আগে ভাল করে স্যানিটাইজার বা সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
২) নাক-মুখ ঢেকে থাকার পরও হাঁচি-কাশি চলতে থাকলে ওই মাস্ক বেশিক্ষণ পরে না থাকাই ভাল। কারণ এক্ষেত্রেও বাড়বে সংক্রমণে ঝুঁকি।
৩) বাতিল করা মাস্ক যেখানে সেখানে ফেলা যাবে না। খোলা জায়গায় বাতিল করা মাস্ক ফেললে সংক্রমণের আশঙ্কা থেকেই যায়। তাই উপযুক্ত সতর্কতা আর পরিচ্ছন্নতায় করোনাভাইরাসের প্রকোপ থেকে নিজেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন।
৪) মাস্ক পরার পর অনেকেই মাঝে মধ্যে সেটিকে মুখের ঠিক জায়গায় আনতে হাত দিয়ে ফেলছেন। এর ফলে হাতের জীবাণু মাস্কে লেগে যাচ্ছে। ফলে উল্টে বিপদের আশঙ্কাই বাড়ছে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন