৮ এপ্রিল, ২০২০ ১৪:৪০

''দেশের বড় ফার্মাগুলো টিকা তৈরির কাজ শুরু করে দিতে পারে''

তৌহিদ এলাহী

''দেশের বড় ফার্মাগুলো টিকা তৈরির কাজ শুরু করে দিতে পারে''

করোনাভাইরাস নিয়মিত মিউটেশন করে স্থানীয় পরিবেশের সাথে অভিযোজন করে। এর দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হবে টিকা।

দেশে বেশ কিছু ফার্মাসিউটিক্যালের টিকা নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। দেশের ভাইরাসকে জিনোম সিকোয়েন্স করে এখনি টিকা তৈরির কাজ স্থানীয়ভাবে শুরু করে দেয়া দরকার।

অনেক ভাইরাল টিকা যেমন ফ্লু টিকা সারাদুনিয়ায় এককভাবে কাজ করে না। এক জায়গার জন্য তৈরি টিকা অন্য দেশে গিয়ে মিসম্যাচ করে। কারণ ঐ জেনেটিক পরিবর্তন। অনেক ভাইরাল টিকা ফেইলরের উদাহরণ অহরহ।

দেশের প্রেক্ষিত মাথায় রেখে যেসব স্ট্রেইন দেশে ইনফেকশন করছে তাদের নমুনা নিয়ে প্রথমে দ্রুত জিনোম সিকোয়েন্স করা দরকার। তারপর টিকা তৈরিতে হাত দেয়া দরকার। প্রশ্ন আসতে পারে কে করবে এটা?

যেহেতু আমরা এই টিকা সম্পর্কে এখনো অন্ধকারে আছি, জানি না কবে কোথায় কি আবিষ্কার হবে, আবিষ্কার হলেই সেটা সবার জন্য উম্মুক্ত হবে কিনা তাও পরিষ্কার না। কোন বড় কোন বিদেশী ফার্মা সেটি তৈরি করতে সক্ষম হলেও আমরা খরচ দিয়ে কতটুকু এফোর্ড করতে পারব সেটাও বড় দুশ্চিন্তা। আর আবিষ্কার করার পর অন্যদের হাত ঘুরে আমাদের হাতে আসতে কতদিন লাগে তাও অজানা। আর তাদের তৈরি টিকা আমাদের দেশে সমানভাবে কার্যকর নাও হতে পারে। তাই নিজেদের সাহায্যে নিজেরাই এগিয়ে আসা উচিত।

আমাদের দেশের বড় ফার্মাগুলো যাদের টিকা তৈরির অভিজ্ঞতা বা প্রয়োজনীয় জনবল আছে তারাই শুরু করে দিতে পারে। এককভাবে না পারলে কয়েকটা মিলে যৌথ উদ্যোগে। তবে শুরু করলেই সফলতা আসবেই- ব্যাপারটা এমন নয়। ভয়ে তারা এটিকে লস প্রজেক্ট ভেবে নাও এগুতে পারে। এখানেই দরকার সরকারকে এগিয়ে আসার।

দরকার হলে সরকার সরাসরি ফার্মাসিউটিক্যালসকে গবেষণা বরাদ্দ দিয়ে দিতে পারে। সংযোগ ঘটিয়ে দিতে পারে অনুজীববিজ্ঞানী, জীন প্রকৌশলী, বায়োকেমিস্ট, ঔষধবিজ্ঞানী ও ডাক্তারদের। গার্মেন্টসের জন্য যেমন প্রণোদনা দেয়া হয়েছে তেমন না হলেও একটা মোটা প্রণেঅদনা দিয়ে এদেরকে শুরু করিয়ে দেয়া আসল। আর নিশ্চয়তা দেয়া উচিত, ফার্মাগুলো সফলভাবে ভ্যাক্সিন উৎপাদন করতে পারলে তাদের থেকেই সরকার কিনবে। অথবা বেসরকারিভাবে বিক্রয়ের জন্য সরকার ফার্মাগুলোকে ভুর্তুকী দেবে।

আসল কথা হলো দেরি করার সময় নেই, অন্যদের দিকে তাকিয়ে সময় নষ্ট করার দরকারও নেই। নিজের কাজ নিজেরা করি।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত) 

লেখক: পলিসি গবেষক, বুশ স্কুল অফ পাবলিক সার্ভিস এন্ড এডমিনিস্ট্রেশন, টেক্সাস এ এন্ড এম ইউনিভার্সিটি

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

সর্বশেষ খবর