প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রতি মুহূর্তে দীর্ঘ হচ্ছে লাশের মিছিল। বিশ্বের ২০৯টি দেশ ও অঞ্চলে একযোগে তাণ্ডব চালাচ্ছে মারণ এই ভাইরাস। এর বিষাক্ত ছোবলে ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী ১৭ লাখ ৮০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার ৮ শতাধিক মানুষের।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো প্রাণঘাতী এই ভাইরাস থাবা বসিয়েছে যুক্তরাজ্যেও। এখন পর্যন্ত দেশটিতে প্রায় ৭৯ হাজার আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৯ হাজার ৮৭৫ জনের।
যুক্তরাজ্যে মৃতদের মধ্যে রয়েছেন একজন উবার চালক। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত শুক্রবার মারা যান তিনি।
জানা গেছে, ট্যাক্সিতে উঠে একজন নারী যাত্রী একনাগাড়ে কাশি দেওয়ার জেরে আক্রান্ত হন দক্ষিণ লন্ডনের ৩৩ বছর বয়সী আইয়ুব আখতার । এরপরই তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হন।
আইয়ুবের ভাই ইয়াসের বলেন, কাশি দেওয়া ওই নারী যাত্রীকে বহনের পর আমার ভাই করোনা আক্রান্ত হয়।
তিনি আরও বলেন, ভাই আমাদের বলেছিল- একজন যাত্রী ট্যাক্সিতে উঠে একনাগাড়ে কাশি দিয়েছে। সেই ঘটনার জেরে তার ভয় হচ্ছে। এর কয়েকদিন পর তারও কাশি শুরু হয়। এমনকি রাতের বেলা আমার ঘর থেকে তার হৃদয় বিদারক কাশির শব্দ শুনতাম। ওই সময় সে শ্বাস নিতেও কষ্ট পেত।
ইয়াসের বলেন, একপর্যায়ে ভাইয়ের পরিস্থিতি খারাপ হলে আমরা অ্যাম্বুলেন্স ডাকি। প্রথমে ক্রাইডনের মেডে হসপিটালে ভর্তি করা হয়। পরে ভাইকে স্থানান্তর করা হয় সেন্ট জর্জ'স হসপিটালে।
মুঠোফোনে এক বার্তায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র থেকে সে আমাদের জানায়, আমি সত্যিই ভয়ে আছি। আমার জন্য তোমরা দোয়া করো। তার কয়েকদিন পরই সে মারা গেল।
তিনি আরও বলেন, আমরা ভাইকে দেখতে যেতেও পারিনি। কিন্তু আমরা জানি, সে খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে ছিল। কারণ, আমরা তাকে বার্তা পাঠালেও সে পাল্টা বার্তা দিতে একদিনেরও বেশি সময় নিত।
ইয়াসের বলেন, ভাই আমাদের কাছে বার্তা পাঠিয়েছিল- সে খুব ভয়ে আছে। কারণ ডাক্তাররা তাকে শ্বাস-প্রশ্বাস চালিয়ে যেতে বলেছে। কিন্তু সে নিজের ফুসফুস দিয়ে শ্বাস টেনে নিতে পারছে না। সবকিছু খুব অল্প সময়ের মধ্যে ঘটছিল। শেষ পর্যন্ত তার খারাপ পরিণতি হলো।
তিনি আরও বলেন, আমরা তাকে দেখার অনুমতি পাইনি। তার শেষকৃত্য কখন করা হবে, সে ব্যাপারেও জানি না। অথচ আমাদের ধর্মে শেষকৃত্য করা হয় মারা যাওয়ার এক বা দুইদিনের মধ্যে। সূত্র: গার্ডিয়ান, ডেইলি মেইল
বিডি প্রতিদিন/কালাম