শিরোনাম
১৭ জুন, ২০২১ ০০:১৫

বেনাপোলে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা

বেনাপোল প্রতিনিধি

বেনাপোলে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা

করোনার দ্বিতীয় ঢেউতে তছনছ হয়ে গেছে বেনাপোলের চিত্র। ইতোমধ্যে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫ জন। করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দিন দিন উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। বেশিরভাগ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মানায় পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হচ্ছে। ভারতফেরত যাত্রীদের বেনাপোলের বিভিন্ন হোটেলে কোয়ারেন্টাইন এবং ভারতীয় ট্রাক শ্রমিকদের লাগামহীন চলাফেরার কারণে করোনা সংক্রমণ বেড়ে গেছে বলে মনে করছেন বেনাপোলবাসী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারত সীমান্ত লাগোয়া বড়আঁচড়া গ্রামে বেড়েছে সবচেয়ে বেশি করোনা রোগীর সংখ্যা। পৌর এলাকার মধ্যে নামাজগ্রাম, দীঘিরপাড়, চোটআঁচড়া, সাদিপুর, এবং ভবেরবেড় গ্রামে করোনার সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি।

বেনাপোলে কোনো হাসপাতাল বা ক্লিনিক না থাকায় শরীরে জ্বর ও নানা উপসর্গ নিয়ে বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন আক্রান্তরা।

করোনার ভয়াবহতা রুখতে বেনাপোল পৌরসভা, বাজার কমিটি যৌথভাবে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মাইকিং করে জনগণকে ঘরে থাকার জন্য অনুরোধ জানালেও কর্মমুখী মানুষ  ঘরে থাকছে না। মাস্ক ছাড়াই চষে বেড়াচ্ছেন বেনাপোল বন্দর এলাকা।

বুধবার শার্শা থেকে যশোরে ৬২ জনের নমুনা পাঠানো হলে ২৫ জন পজেটিভ শনাক্তের মধ্যে বেনাপোলের ৭ জন। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দেওয়া তথ্যে ২২ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত শুধু বেনাপোলে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৫ জন বলা হলেও প্রকৃত সংখ্যা ৩ শতাধিক হবে বলে অনেকে ধারণা করছেন।

গত পরশু সর্বোচ্চ ১১ জন পজেটিভ রোগী চিহ্নিত হয়ে বেনাপোলে। এ ছাড়া একইদিন কোয়ারেন্টাইনে থাকা ভারত ফেরত যাত্রীদের মধ্যে ৬ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে যশোর সদরে স্থানান্তরিত হন। এ পর্যন্ত বেনাপোলে আবাসিক হোটেলে ভারতফেরত করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে মোট ২৪ জন। তবে মোট আক্রান্তের সংখ্যা শতাধিক। করোনা সংক্রমণে এ পর্যন্ত শার্শা উপজেলায় আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৬২১জন। এর মধ্যে আইসোলেশনে আছেন ১২৩ জন। বিভিন্ন সময়ে মারা গেছেন ১১ জন।

বুধবার যশোর জেনম সেন্টারের দেওয়া তথ্যে শার্শায় সংক্রমণের হার ৪৩ শতাংশ বলে জানা গেছে। সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি থামাতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাসনা শারমিন, সহকারী পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে বাজারে অহেতুক জনগণের চলাচল নিরুৎসাহিত করতে মাইকিং এবং মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য স্বশরীরে মনিটরিং করছেন। মাস্কবিহিন লোকজনকে দফায় দফায় জরিমানা করেও মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি  করতে পারছেন না ভ্রাম্যমাণ আদালত।

করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে নড়েচড়ে বসেছে উপজেলা প্রশাসন। লকডাইন দেওয়া না হলেও বুধবার থেকে কঠোর নজরদারির মধ্যে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দোকান খুলে রাখা হচ্ছে। সামাজিক দূরুত্ব মেনে চলতে মসজিদ, ব্যাংক, কাস্টমস ও বন্দরে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মো. আজিজুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সংক্রমণ রোধে বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারী প্রায় ৭ হাজার পেশাজীবী মানুষকে অবিলম্বে টিকা প্রদান কর্মসূচির আওতায় না আনতে পারলে ভয়াবহ রূপ নেবে বেনাপোলের সার্বিক অবস্থা।

সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি থামাতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাসনা শারমিন, সহকারী পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে বাজারে অহেতুক জনগণের চলাচল নিরুৎসাহিত করতে মাইকিং এবং মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য মনিটরিং করছেন।

মাস্কবিহিন লোকজনকে দফায় দফায় জরিমানা করেও মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারছেন না।

পুলিশের পাশাপাশি বন্দর এলাকায় টহল বাড়ানো হয়েছে, যাতে বন্দর থেকে কোনো ভারতীয় ট্রাক শ্রমিক বের হতে না পারেন। সীমান্তের সবগুলো অবৈধ পারাপারের পথ  অনেক আগেই সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।  

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

সর্বশেষ খবর