রবিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

ছাত্রদল ২১ সদস্যের কমিটির ১৪ জনের পদত্যাগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি কেন্দ্রীয় দফতর থেকে অনুমোদন ও প্রকাশিত হওয়ার পরই সমালোচনার ঝড় সর্বত্র ওঠে। আহ্বায়কের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ ঘরানা, অছাত্র ও বিবাহিতের অভিযোগে ফুঁসে ওঠে ছাত্রদলের একাংশের নেতা-কর্মীরা। প্রতিবাদে হয়েছে মিছিল ও পথসভা। পুলিশ গ্রেফতার করেছে দুই নেতাকে। ৪৮ ঘণ্টা পর পরই ঘটেছে পদত্যাগপত্র জমার প্রতিযোগিতা। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২১ সদস্যের কমিটির ১৪ জনই বিভিন্ন অভিযোগ উল্লেখ করে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাফিজ উল্লাহর কাছে। দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, এক বছর পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সরাইল উপজেলা ছাত্রদলের ২১ সদস্যের কমিটির অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় দফতর। এরপর ফুঁসে ওঠে উপজেলা ছাত্রদলের একাংশের নেতা-কর্মীরা। তাদের অভিযোগের আহ্বায়ক রিফাত বিন জিয়ার বিরুদ্ধে। আহ্বায়ক কমিটিকে অবৈধ দাবি করে ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে সরাইলের প্রধান সড়কে একটি মিছিল করেছে।

 কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে করেছে পথসভা। রিগান ও মোস্তাফিজ নামের দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরের দিন ২৫ ফেব্রুয়ারি ২১ সদস্যের ওই কমিটির ১৪ জন সদস্যই বিভিন্ন অভিযোগ এনে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সম্পাদকের মাধ্যমে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। পদত্যাগপত্রে তারা বলেন, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে সাংগঠনিক টিমের কর্মী সম্মেলনে ছাত্রদলের তৃণমূল ও জেলা ছাত্রদলের মতামতকে উপেক্ষা করে টাকায় প্রভাবিত হয়ে আওয়ামী লীগ নেত্রীর বিবাহিত ছেলে রিফাতকে আহ্বায়ক করেছে। রিফাত আওয়ামী ঘরানার ছেলে। তার মা বেবী ইয়াছমিন উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদিকা। নারী নির্যাতনসহ একাধিক মামলার পলাতক আসামি। প্রত্যন্ত এলাকার রিফাত একাধিক বিয়ে করে এখন ঢাকায় বসবাস করছেন। ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে রিফাত কোনো দিনও জড়িত ছিল না। আর সদস্য সচিব আমান উল্লাহ ঢাকায় বসবাস করছেন। আদম ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ছাত্রদলের মাঠের সৈনিক, হামলা মামলা ও কারা নির্যাতিত নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে কমিটি করা হয়েছে। রিফাত ও আমানকে দিয়ে সরাইল উপজেলা ছাত্রদল চলবে না। আর এ জন্যই তারা একসঙ্গে ১৪ জন এ কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন। কমিটির সদস্য আতিকুর রহমান, সাইফুল ইসলাম, গাজী উবায়দুল্লাহ, মো. মাহবুবুর রহমান, মো. মহসিন মিয়া, মো. আক্তার মিয়া, মো. জুবায়েদ মিয়া, মো. সোহাগ মিয়া, নূরুজ্জামান ও মো. মোস্তাকিমুর রহমান এক যোগে ১৪ জনের পদত্যাগের কথা স্বীকার করে বলেন, রিফাত এক সময় ছাত্রলীগ করত। ঢাকায় বসবাস করেন। সে জীবনে কোনো দিন ছাত্রদল করেনি। বিবাহিত ও একাধিক মামলার পলাতক আসামি। ছাত্রত্বও নেই। আমানও এলাকায় থাকে না। ঢাকায় আদম ব্যবসা করে। তাদেরকে দিয়ে সরাইল উপজেলা ছাত্রদল চলবে না। তাই আমরা নতুনভাবে যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে কমিটি চাই। আহ্বায়ক রিফাত বিন জিয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ মিথ্যা। আমি অবিবাহিত। আওয়ামী লীগ করে তাই মায়ের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। কেউ পদত্যাগ করেনি। এগুলো মিথ্যা ও ভুয়া। আমার বিরুদ্ধে একটি কুচক্রী মহলের গভীর ষড়যন্ত্র। জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফুজায়েল চৌধুরী সরাইল ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির ১৪ জনের পদত্যাগপত্র প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য পত্রগুলো কেন্দ্রে পাঠানো হবে।

সর্বশেষ খবর