মঙ্গলবার, ২ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বিপাকে পোলট্রি খামারিরা

মো. কাবুল উদ্দিন খান, মানিকগঞ্জ

বিপাকে পোলট্রি খামারিরা

মানিকগঞ্জে পোলট্রি মুরগির মূল্য হ্রাসবৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছে খামারি ও খুচরা বিক্রেতারা। একবার লাভবান হলে আরেকবার লোকসান গুনতে হচ্ছে। উচ্চ মূল্যে মুরগি বিক্রি করেও অনেক সময় লোকশান গুনতে হচ্ছে তাদের। সেই সঙ্গে ক্রেতারাও হিমশিম খাচ্ছে চড়া দামে মুরগি কিনতে। মুরগির দাম বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মুরগির খাবার, ওষুধ ও বাচ্চার দাম। অপরদিকে মুরগির দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছে ক্রেতারাও। আজ একদাম কাল আরেক দাম এ নিয়ে প্রতিনিয়ত ক্রেতা বিক্রেতার মধ্যে ঝামেলা চলছেই। স্বল্প আয়ের মানুষ থেকে মধ্যবিত্তের লোকজন তাদের চাহিদা মেটায় পোলট্রি মুরগি দিয়ে। কিন্তু এগুলোও আয়ত্তের বাইরে চলে যাচ্ছে। নিয়মিত ব্রয়লার মুরগি ক্রেতা আলী আজম বলেন, সকল প্রকার মাছের দাম চড়া ব্রয়লার মুরগিই ছিল আমাদের একমাত্র ভরসা। এখন এ মুরগি কেনাও কষ্টের। তিনি আরও বলেন, বাচ্চাদের এখন কী খাওয়ামু। বাজারে বেশিরভাগ ক্রেতাই হতাশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শহরের এক শিক্ষক বলেন, আমি নিয়মিত সোনালি মুরগি ক্রয় করে ড্রেসিং করে নিতাম। দেশি মুরগি তো কেনা সম্ভব নয়। বাসার লোকজন দেশি মুরগি মনে করেই খেত। এখন সোনালি কেনার মতো অবস্থাও নেই। শহরের বেওথা এলাকার মায়ের দোয়া খামারির মালিক আনিসুর রহমান কোনো নীতিমালা না থাকার কারণে আমরা সব সময় ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসা করি। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির পাইকারি দাম ছিল ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি। বর্তমানে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা কেজি। সোনালি মুরগিও কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা কমেছে। তিনি আরও জানান, তার খামারে ২০ হাজার মুরগি রয়েছে। এখন তিনি ক্ষতির মুখে পড়েছেন। মুরগির দাম কমলেও মুরগির খাবারের দাম কমেনি। তিনি একজন খুচরা বিক্রেতাও। মানিকগঞ্জ বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী সাব্বির আহমেদ লাবু ও ইউসুফ আলী বলেন, মুরগির উঠানামা করায় আমরা খুব সমস্যায় আছি। ক্রেতারা আমাদের ওপর আস্থা হারাচ্ছে। খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলেন, কোনো নীতিমালা না থাকার কারণে খাদ্য ও বাচ্চার দাম ঠিক থাকে না। তাই বাজারে অস্থিরতার সৃষ্টি হয়। সবাই দাবি করেন একটি বাস্তবসম্মত নীতিমালা করার। জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, মানিকগঞ্জ জেলায় ১৩৭টি লেয়ার, ১৪০টি ব্রয়লারসহ কক ও সোনালি মুরগি মিলে তিন শতাধিক পোলট্রি মুরগির খামার রয়েছে। করোনা ও বন্যার কারণে বেশ কিছু খামার বন্ধ হয়ে গেছে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম বলেন, মুরগির বাচ্চা ও খাদ্যের দাম অতিরিক্ত বাড়ার কারণে বেশি দামে মুরগি বিক্রি হচ্ছে। মূল্য উঠানামার কারণে খামারি, খুচরা ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই বিরম্ভনার শিকার হচ্ছেন। একটি সঠিক নীতিমালা থাকলে এরকম হতো না। একটি বাস্তবসম্মত নীতিমালা প্রয়োজন। ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর