রবিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

আশুগঞ্জে নদী ভাঙনে হুমকির মুখে গ্রিড লাইন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

আশুগঞ্জে নদী ভাঙনে হুমকির মুখে গ্রিড লাইন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার মেঘনা বুকে জেগে ওঠা চরসোনারামপুর গ্রামে আবারও নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। হঠাৎ করে প্রায় এক ঘণ্টার নদী ভাঙনে ৩০ থেকে ৩৫ ফুট এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে পুরো চরবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে আতংক। তাৎক্ষণিক ভাঙন থেকে মুক্তি পেতে এলাকায় উলোধ্বনি ও পূজা অর্চনার মাধ্যমে গঙ্গা দেবীর কাছে প্রার্থনা করেন চরবাসী। আশুগঞ্জ উপজেলার মেঘনার বুকে শত বছর আগে জেগে ওঠা গ্রাম চরসোনারামপুর। এখানে বসবাস করে প্রায় ২ সহস্রাধিক লোক। তাদের অধিকাংশেরই পেশা নদী থেকে মাছ ধরা। গত দু-তিন বছরের অব্যাহত ভাঙনে এই চর সোনারামপুরের শত শত একর জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। দিন দিন কমে আসছে এই চরের সীমারেখা। চরের পশ্চিম ও দক্ষিণ পাশের অব্যাহত নদী ভাঙন বালির বস্তা ফেলেও ঠেকানো যাচ্ছে না। হুমকির মুখে পড়েছে চরের একমাত্র শ্মশান ও জাতীয় গ্রিড লাইনের টাওয়ার। চরবাসীরা জানায়, হঠাৎ চরের পশ্চিম পাশ দিয়ে তীব্র ভাঙন শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যে চরের ৩০-৩৫ ফুট এলাকা পানিতে তলিয়ে যায় এবং ভাঙন এলাকায় প্রায় ৩০ ফুট গভীরতা সৃষ্টি হয়। এ সময় মহিলাদের উলোধ্বনি আর চিৎকারে পুরো চর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম পারভেজ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিতাই চন্দ্র ভৌমিকসহ একটি প্রতিনিধি দল ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। সুমন দাস বলেন, উলোধ্বনি, মোমবাতি জ্বালিয়ে, ফুল ও ফল দিয়ে পূজা অর্চনার মাধ্যমে গঙ্গা দেবীর কাছে প্রার্থনা করেছি। গঙ্গা দেবীর কাছে প্রার্থনার কারণেই এক ঘণ্টা পর ভাঙন বন্ধ হয়েছে।ভাঙন এলাকায় রয়েছে চরের একমাত্র শ্মশান ও বেশ কয়েকটি জেলে পরিবারের বসতবাড়ি। দক্ষিণ পাশের ভাঙন এলাকায় রয়েছে আশুগঞ্জ-সিরাজগঞ্জ ২৩০ কেভি জাতীয় গ্রিড লাইনের রিভার ক্রসিং টাওয়ার। দুই পাশে অব্যাহত ভাঙনে চরের একমাত্র শ্মশান ও গ্রিড লাইনের বৈদ্যুতিক এই টাওয়ারটি ঝুঁকির মুখে পড়েছে। উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিতাই চন্দ্র ভৌমিক বলেন, মেঘনা নদীতে অপরিকল্পিত ড্রেজিংএর ফলে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে।

ফলে পানি প্রবল স্রোতে চরসোনারামপুরে ব্যাপক ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এভাবে ভাঙতে থাকলে একদিন পুরো চরই নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস বলেন, ভাঙনস্থল পরিদর্শন করেছি। ভাঙন এলাকাকে জরুরি ঘোষণা করা হয়েছে। দুই পাশের ভাঙনের জন্য প্রতিটি ২০ লাখ টাকা করে দুটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রায় ৯ হাজার বালি বস্তা ফেলে আপাতত ভাঙন ঠেকানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম পারভেজ জানান, শুধু বস্তা ফেলে এই নদী ভাঙন ঠেকানো সম্ভব হবে না। স্থায়ী প্রকল্প গ্রহণ করে চরের চার পাশে ব্লক দিতে পারলে চরটিকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।

সর্বশেষ খবর