বৃহস্পতিবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

বোরো চাষে ব্যস্ত কৃষক

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

বোরো চাষে ব্যস্ত কৃষক

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার কৃষকরা কুয়াশামাখা সকালে বোরো আবাদ চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সম্প্রতি কয়েক বছর থেকে ধানের দাম ভালো পাওয়ায় এ মৌসুমে বোরো চাষে তাদের মাঝে বেশ উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বর্তমানে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে ধানের কচি চারার সবুজ গালিচা, কোথাও কোথাও গভীর নলকূপ থেকে চলছে পানিসেচ, ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষের কাজ, গরু-মহিষ ও মানুষের দ্বারা মই দিয়ে চলছে মাঠ সমান করার কাজ। আবার বোরো ধান রোপণের জন্য বীজতলা থেকে তোলা হচ্ছে ধানের চারা। কৃষকদের শরীরে রয়েছে হালকা শীতের পোষাক, মাথায় গরম কাপড়। কৃষান-কৃষাণিরা রয়েছে ফুরফুরে মেজাজে। কেউবা জমিতে হাল চাষ দিচ্ছেন, কেউ জমির আইলে কোদাল মাড়ছে, কেউ জৈব সার দিতে ব্যস্ত, আবার কেউ সেচের জন্য ড্রেন নির্মাণ কিংবা পাম্পের বা শ্যালো মেশিনের জন্য ঘর তৈরি করছেন। আবার অনেকে তৈরি জমিতে পানি সেচ দিয়ে ভিজিয়ে রাখছেন, কেউ আবার বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলে তা রোপণ করছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর গোমস্তাপুর উপজেলায় ১৫ হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার ৮৭০ হেক্টর বেশি জমিতে লক্ষ্যমাত্রা বেশি ধরা হয়েছে। তার মধ্যে উফসী জাতের বোরো ধান ১৪ হাজার ২২০ হেক্টর , হাইব্রিড জাতের ধান ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। এ পর্যন্ত ২ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণ অর্জিত হয়েছে। এদিকে রহনপুর ইউনিয়নের বংপুর গ্রামের চাষি কলিমুদ্দিন বলেন, গত বছর আমন চাষাবাদ করে লাভবান হয়েছেন তিনি। এবারও সে আশায় ৪ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ শুরু করেছেন। অপরদিকে গোমস্তাপুর ইউনিয়নের নয়াদিয়াড়ী গ্রামের কৃষক মনিরুল ইসলাম জানান, গত আমন মৌসুমে ব্রি-জাতের ব্রি-৮১, জিরাশাইল ধানের ফলন ও বাজারমূল্য ভালো পাওয়ায় চলতি বোরো মৌসুমেও আবাদ করতে আমরা বেশি আগ্রহী। জমি থেকে সরিষা তোলা হয়েছে এখন জমিতে বোরো ধান রোপণ করা হবে। অন্যদিকে কৃষি শ্রমিক লীলাবতি জানান, করোনা মহামারীর কারণে তারা বিপদগ্রস্ত ছিলেন। বাইরে কাজে যেতে পারেননি। এলাকায় তেমন কোনো কাজ না থাকায়, পরিবার নিয়ে বেশ অভাব অনটনের মধ্যে রয়েছেন তিনি। তাই বোরো মৌসুমে সকালে কুয়াশা ও ঠান্ডা বেশি হলেও বোরো ধান লাগাতে হচ্ছে, এতে একটু কষ্ট হলেও ধান রোপণ করে দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরি পাচ্ছেন তিনি। এবার একটু বেশি আয় হবে বলে আশা করছেন তিনি। এ ব্যাপারে  উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সীমা কর্মকার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জমিতে লাইন ও লোগো করে ধান রোপণ করার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ধানের চারা একটু বড় হলে জমিতে দশ হাত অন্তর লাঠি পুঁতে রাখার জন্য কৃষকদের বলা হয়েছে। এতে করে পোকার আক্রমণ থেকে ধানের চারা রক্ষা পাবে। এ ছাড়া কৃষকদের মাঝে যথেষ্ট পরিমাণে বীজ ও সার প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী কমর উদ্দিন জানান, এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় বোরো আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তাদের আশা ভালো ফলন হবে। এছাড়া মৌসুমে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর