বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ভারী বর্ষণে পাহাড় ধসের শঙ্কা

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

ভারী বর্ষণে পাহাড় ধসের শঙ্কা

পাহাড়ে টানা বৃষ্টি। কখনো হালকা, কখনো মাঝারি। আবার কখনো ভারী। যেন থামছেই না এ বৃষ্টি। পাহাড়ে এমন মেঘাচ্ছন্ন আকাশ দেখে শঙ্কার কালো মেঘ জমেছে পাহাড়বাসীর মনে। হতে পারে ধস- রয়েছে এমন আশঙ্কা। তাই বৃষ্টি দেখলেই আশ্রয় কেন্দ্রের সন্ধানে নামে পাহাড়ে আশ্রিতরা। তবে এরই মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলো চিহ্নিত করে সতর্কতার সাইন বোর্ড লাগিয়েছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক। অন্যদিকে রাঙামাটি আবহাওয়া কর্মকর্তা মো. হুমায়ন কবির জানান, সমুদ্রে নিম্নচাপের কারণে এ বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে আরও কয়েক দিন। রয়েছে ভারী বৃষ্টির শঙ্কা। তাই সতর্ক থাকতে হবে স্থানীয়দের।  রাঙামাটি পৌরসভার তথ্য মতে, শুধু রাঙামাটি শহর এলাকায় ১ লাখ ২৫ হাজারের অধিক মানুষ পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে বসবাস করে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো হচ্ছে- শহরের শিমুলতলী, নতুনপাড়া, মনতলা, রাঙ্গাপানি, রিজার্ভ, এসপি অফিস সংলগ্ন এলাকা, শহীদ আবদুুল আলী একাডেমি সংলগ্ন ঢাল, পুলিশ লাইন সংলগ্ন ঢাল, স্বর্ণটিলা পাহাড়ের ঢাল, রাজমণিপাড়া পাহাড়ের ঢাল, রেডিও স্টেশনের পাশে শিমুলতলী পাহাড়ের ঢাল, লোকনাথ মন্দির পাহাড়ের ঢাল, আনসার ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ের ঢাল, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সংলগ্ন পাহাড়ের ঢাল, চম্পক নগর পাহাড়ের ঢাল, পাবলিক হেলথ পাহাড়ের ঢাল, আমানতবাগ পাহাড়ের ঢাল, মুজিবনগর পাহাড়ের ঢাল এলাকা। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতে বিভিন্ন জায়গায় পাহাড় ধসের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক, রাঙামাটি আসামবস্তি- কাপ্তাই সড়কে ব্যাপক ধস দেখা দিয়েছে। রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান জানান, রাঙামাটি পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডে ২৯টি আশ্রয় কেন্দ্র সব সময় প্রস্তুত। পাহাড়বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো পরিদর্শন করে ৩১টি স্থানে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড আগে থেকে স্থাপন করা আছে। এ বিষয়ে প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করা হয়েছে।  প্রসঙ্গত, রাঙামাটিতে পাহাড় ধসে সবচেয়ে বড় ধরনের জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হয় ২০১৭ সালে ১৩ জুন। সে সময় পাহাড় ধসের ঘটনায় প্রাণ হারায় ১২৮ জন। জেলা প্রশাসনের এক পরিসংখ্যায় দেখা যায়- রাঙামাটির ১০টি উপজেলা মিলে পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১৮ হাজার ৫৫৮টি পরিবার। তার মধ্যে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি হচ্ছে ১ হাজার ২৩১টি। আর আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ৯ হাজার ৫৩৭টি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে- বন, বিদ্যুৎ, শিল্পকারখানা, মৎস্য খামার, গবাদি পশু. ঘাঁস-মুরগি। এ ছাড়া ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলি জমিও। যার পরিমাণ ১৮ হাজার ৯৯.৩১ হেক্টর। এ ছাড়া শহর এলাকায় ১৪৫টি স্থানে পাহাড় ধসে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিভিন্ন সড়ক। দেশের সব জেলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় রাঙামাটি। মাটির নিচে বিলীন হয়ে যায় ১৭টি পরিবার।

সর্বশেষ খবর