বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

৪ কোটি টাকার সেতু পার হতে হয় মই দিয়ে

বেলাল রিজভী, মাদারীপুর

৪ কোটি টাকার সেতু পার হতে হয় মই দিয়ে

মাদারীপুরের কালকিনিতে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি সেতুর সংযোগ সড়ক না থাকায় দুটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষের চরম দুর্ভোগ। সীমাহীন দুর্ভোগে থাকা মানুষের কথা ভেবে দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণ করার দাবি স্থানীয় জনসাধারণের। তবে, কর্তৃপক্ষ বলছে দ্রুতই সংযোগ সড়ক নির্মাণ করার কাজ করা হবে। কালকিনি উপজেলা এলজিইডি কার্যালয় থেকে জানা গেছে, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার শিকারমঙ্গল ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ বাজার হচ্ছে মিয়ারহাট। পাশেই আড়িয়াল খাঁ নদের উপরে চরদৌলতখান ও শিকারমঙ্গল ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াত সুবিধার জন্য নির্মাণ করা হয় সেতু। ‘অনূর্ধ্ব ১০০ মিটার সেতু উন্নয়ন প্রকল্পের’ আওতায় ৩ কোটি ৯৪ লাখ ৫৯ হাজার ৩৭৬ টাকা খরচে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সরদার এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে এলজিইডি কর্তৃপক্ষের ৫১ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতু নির্মাণের চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী ২০২০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয়। যা চলতি বছরের জুনের মধ্যেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেতুটির তিনটি স্প্যানসহ মূল অবকাঠামো গতবছরই নির্মাণ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সেতুর দুইপাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করেই ফেলে রাখা হয়। এতে দুই পাড়ের দুই ইউনিয়নের বাসিন্দারা সেতুটির সংযোগ সড়ক না থাকায় কাঠের মই ব্যবহার করে চরম দুর্ভোগ নিয়ে বাধ্য হয়েই চলাচল করছে।

ষাট্টোধ্ব সেকেন্দার মালত নামের এক ব্যক্তি বললেন, তিনি মোক্তারহাট এলাকা থেকে প্রতি সপ্তাহের দুদিন মিয়ারহাটে মালামাল বেচাকেনা করতে আসেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এই সেতুটির কাঠের মই বেয়ে উপরে উঠতে খুব কষ্ট হয়। তাই এখন সপ্তাহে মিয়ারহাটে একবার আসেন।’ মিয়ারহাট এলাকার বাসিন্দা মরিয়ম বেগম বললেন, ‘সেতুর গোড়ায় মাটি না দেওয়ায় আমাদের সেতুতে উঠতে খুব কষ্ট হয়। যারা বুড়া মানুষ তাদেরতো আরও বেশি কষ্ট হয়।’ মিয়ারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী বললেন, ‘মাটি থেকে সেতুর উচ্চতা প্রায় ১২ ফুটের মতো। তাই ব্রিজ দিয়ে উঠতে কষ্ট হয় বলে অনেকে ঠিকমতো স্কুলে আসতে চায় না।’ শুধু এরাই নয়। এই এলাকার অনেক মানুষই সেতুটিতে সংযোগ সড়ক না করায় চলাচলে দুর্ভোগের কথা জানালেন। সেতুর সংযোগ সড়ক কেন নির্মাণ করা হচ্ছে না জানতে চাইলে কালকিনি উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী রেজাউল করিম বললেন, ‘আমি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলেছি। যতদ্রুত সম্ভব এই  সেতুর দুইপাড়ে মাটি ভরাট করে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে দেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘আশা করছি চলতি মাসেই আমরা মাটি ভরাটের কাজ শুরু করে দেব। এরপর থেকে এই এলাকার মানুষের চলাচলে আর সমস্যা হবে না।

সর্বশেষ খবর