বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

দালালের উৎপাতে অতিষ্ঠ রোগী

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

দালালের উৎপাতে অতিষ্ঠ রোগী

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে দালালের উৎপাতে অতিষ্ঠ রোগী ও তার স্বজনরা। দীর্ঘদিন ধরে চলছে দালালের উৎপাত। দালালদের বের করা হলেও তারা বিভিন্ন কৌশলে হাসপাতালে প্রবেশ করছেন। এ ছাড়া রয়েছে অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ক্যাজুয়েলিটি বিভাগে ভর্তি হয়েছেন বরুড়ার মোবারক হোসেন। মাথায় আঘাত পেয়েছেন। দালাল সকাল ৯টায় এসে তার স্বজনকে বলেন, ১০টায় ডাক্তার রাউন্ডে আসবেন। এই হাসপাতালে সিটি স্ক্যান করতে ১২টা বাজতে পারে। আমরা ১০ মিনিটে সিটি স্ক্যান করে দেব। পরে ডাক্তার দেখাতে পারবে না। এভাবে ভুল তথ্য দিয়ে রোগীকে বিভ্রান্ত করেন তারা। আরও দেখা গেছে, সিটে রোগী। সিটের পাশে ফ্লোরে রোগী। হাসপাতালের হাঁটার পথে রোগী। কম জায়গায় বেশি রোগী রাখায় ঘিঞ্জি পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। মাথার ওপর ফ্যান ঘুরলেও সেখানে মানুষের গায়ের গরমে দাঁড়ানো দায়। নতুন ভবনে নিচতলায় টিকিট কাউন্টারের সামনে এক ক্লিনিক স্টাফকে ঘুরতে দেখা যায়। তিনি সরল লোকদের টার্গেট করে প্রিয় হওয়ার চেষ্টা করেন। রোগী, স্বজন এবং হাসপাতালের সূত্র জানায়, ১৯৯২ সালে এ হাসপাতালটি ২৫০ শয্যা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে এটি ৫০০ শয্যায় উন্নীত হয়। এখানে প্রতিদিন ১১০০ রোগী ভর্তি হয়। আউটডোরে চিকিৎসা নেন প্রতিদিন ২০০০-২৫০০ রোগী। হাসপাতালের সামনের কয়েকটি ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ফার্মেসির দালাল ও অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের উপদ্রবে অতিষ্ঠ রোগী ও তাদের স্বজনরা। শহরে এক কিলোমিটার পথের জন্য কিছু অ্যাম্বুলেন্স চালক নিচ্ছেন ৫ হাজার টাকা। কিছু চিকিৎসক, দুজন ওয়ার্ড মাস্টার ও অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগের কিছু কর্মী দালালদের সহযোগিতা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। মেডিসিন বিভাগের ফ্লোরে চিকিৎসা নিচ্ছেন কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার বারেরা গ্রামের সুমাইয়া খাতুন। তিনি বলেন, এক সপ্তাহ আগে ভর্তি হয়েছি। পথের পাশে ফ্লোরে থাকছি। কে কী নিয়ে যায় সেই চিন্তায় ঠিকমতো ঘুমানো যায় না।

একটি সিট পেলে সুবিধা হতো। ক্রীড়া সংগঠক বদরুল হুদা জেনু বলেন, সম্প্রতি আমার একজন স্বজন কুমেক হাসপাতালে মারা যান। তার লাশ আনতে নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করতে বাধা দেয় অ্যাম্বুলেন্স চালকরা। তাদের লোকদের বাইরে কারও অ্যাম্বুলেন্স এখানে প্রবেশ করতে পারবে না। হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. মহিউদ্দিন বলেন, দালাল ও অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের কাছে মানুষ জিম্মি এটা সত্য। এই বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে ব্যবস্থা নিয়েছি। এক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, এই হাসপাতালে বেড সংকট রয়েছে। ১ হাজার বেডে উন্নীত করা ও সে নিরেখে জনবল দেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর