উদ্বোধনের প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও দিনাজপুরের হিলিতে এক মুঠো ধান সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। খোলাবাজারের তুলনায় গুদামে দাম কম ও ঝামেলার কারণে ধান দিচ্ছেন না কৃষক। তেমনি উৎপাদন খরচের তুলনায় দাম কম হওয়ায় গুদামে চাল দিতে আগ্রহী নন মিলাররা। এতে চলতি মৌসুমে ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযানের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার শঙ্কা। ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে দাবি খাদ্য বিভাগের। সারা দেশের ন্যায় গত বছরের ১৭ নভেম্বর হিলিতে ২৮ টাকা কেজি দরে কৃষকদের কাছ থেকে ৪৫৬ মেট্রিক টন ধান ও ৪২ টাকা কেজি দরে মিলারদের কাছ থেকে ২০০ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এখন পর্যন্ত এক মুঠো ধান সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। উপজেলার ২২ জন মিলারের মধ্যে ১১ জন মিলার সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবারের জন্য চুক্তিবদ্ধ হলেও এখন পর্যন্ত পাঁচজন মিলার ৫৭ টন চাল সরবরাহ করেছে। হিলির ইসমাইলপুরের কৃষক ছয়ফুল ইসলাম বলেন, বাহিরে ধানের দাম ১ হাজার ৩০০ টাকার ওপরে যার কারণে আমরা কৃষকরা বাহিরে ধান বিক্রি করে দিয়েছি। এ ছাড়া গুদামে ধান দিতে গিয়ে অনেক ভেজাল হয় ধান নেয় না, এটা লাগবে ওটা লাগবে পাতান দেখায় আবার বলে ফ্রেস ধান লাগবে আবার গুদামে দালাল বের হয় এসব নানা ঝামেলার কারণে আমরা গুদামে ধান দেই না। তবে সরকারি গুদামে যদি ধানের দাম বাড়ানো হয় তাহলে আমরা সেখানেই ধান দিব। বর্তমান যে দাম তাতে করে আমরা কৃষকরা কেন লোকসান করে গুদামে ধান দিতে যাব। অপর কৃষক মহসিন আলী বলেন, বর্তমানে খোলাবাজারে ধানের দাম প্রতি মণ ১ হাজার ২৮০ টাকা থেকে ১ হাজার ৩২০ টাকা চলছে। আর সেখানে ধানের দর বেঁধে দিয়েছে ১ হাজার ৮০ টাকা। খোলাবাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ার কারণেই কৃষকরা যেমন গুদামে ধান দিচ্ছে না তেমনি সরকার ধান পাচ্ছে না। এ ছাড়া খোলাবাজারে ধান বিক্রি করলে কৃষকদের কোনো ঝামেলা নেই, ধান তেমন পরিষ্কার করতে হয় না। আবার এসব ধান বাজারজাত করতে হয় না ধান কাটা মাড়াই শেষে খলা থেকেই ধান নিয়ে যায় পাইকাররা। সেখানে গুদামে দিতে গেলে ধান ১৩ ভাগ শুকনা হতে হয় পরিবহন খরচসহ অন্যান্য খরচ করে তারপরে গুদামে নিয়ে ধান দিতে হয়। যার কারণে খরচ বেশি হওয়ায় কৃষকদের পোষায় না যার কারণে কৃষকরা গুদামে ধান দিতে আগ্রহী নয়। পিয়ারবক্স হাসকিং মিলের স্বত্বাধিকারী আলতাফ হোসেন ম-ল বলেন, বর্তমানে সরকার যে মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে ৪২ টাকা কেজি সেই মূল্যে গুদামে চাল দিতে গিয়ে আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। কেজিপ্রতি আমাদের ৩ থেকে ৪ টাকা করে লোকসান গুনতে হচ্ছে।