রবিবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

ডাকাত সন্দেহে দুই যুবককে পিটিয়ে হত্যা

কুমিল্লা প্রতিনিধি

মুরাদনগর উপজেলার দারোরা ইউনিয়নে ডাকাত সন্দেহে পালাসুতা গ্রাম থেকে ইসমাইল হোসেন (৩০) ও কাজিয়াতল গ্রামের নুরে আলমের (৩৫) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। লাশ দুটি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল সন্ধ্যায় নিজ নিজ এলাকায় দাফন করা হয়েছে। তবে কোনো মামলা হওয়ার আগেই দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন আরেক যুবক।

নিহত নুরে আলমের পরিবারের দাবি, নুরে আলম কুমিল্লা শহরে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। বৃহস্পতিবার তিনি কাজিয়াতল গ্রামের বাড়িতে আসেন।

 ওই দিন রাতে বন্ধু কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কোটবাড়ী বাঘমারা এলাকার বাসিন্দা সেলিম মিয়ার ছেলে শাহজাহানকে সঙ্গে নিয়ে পাশের পালাসুতা গ্রামের হাশেম মেম্বারের বাড়িতে তার শ্বশুরালয়ে যান। জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে পালাসুতা, লক্ষ্মীপুর, বোরার চর, নেয়ামতকান্দি, মেলাম চর ও কাজিয়াতল গ্রামে চুরি-ডাকাতি বেড়ে যাওয়ার আলোচনা ছিল। এ নিয়ে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ ছিলেন। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে পালাসুতা গ্রামের মসজিদের পাশে মাহফিল হচ্ছিল। হঠাৎ খবর আসে গ্রামে ডাকাত ঢুকেছে। তখন মসজিদের ও মাহফিলের মাইক থেকে ঘোষণা দেওয়া হয় গ্রামে ডাকাত ঢুকেছে। লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান করেন। এ সময় পালাসুতা গ্রামের জামাই ও একই গ্রামের বাসিন্দা ইসমাইলসহ তিন যুবককে গ্রামের কয়েকজন আটক করে পিটুনি দেন। এতে ঘটনাস্থলেই নুরে আলম ও চাচাত শ্যালক ইসমাইল মারা যান। গতকাল সন্ধ্যায় কাজিয়াতল গ্রামে নুরে আলমের বাবা আবদুস ছালাম বলেন, ‘আমার ছেলে পালাসুতা গ্রামের নায়েব আলীর মেয়ে হালিমা বেগমকে ১৫ বছর আগে বিয়ে করে। আবু বক্কর নামে তাদের নয় বছরের একটি ছেলে রয়েছে। পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে শ্বশুর পরিবারের সঙ্গে মান-অভিমান ছিল। সে বিরোধ মেটাতে নুরে আলম তার এক বন্ধুকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি গেলে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তাকে ও তার এক চাচাতো শ্যালককে পিটিয়ে হত্যা করে ডাকাত বলে প্রচার করেছে। আমি এ হত্যার বিচার চাই আর এজন্য আমি অসুস্থ থাকায় আমার স্ত্রী জাহানারা বেগমকে একাধিকবার থানায় পাঠিয়েছি ছেলে হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য। কিন্তু থানা পুলিশ মামলা নেয়নি, তাই আদালতে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’ এ বিষয়ে চেষ্টা করেও নায়েব আলীর পরিবারের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান বলেন, ‘কী কারণে তাদের গণপিটুনি দেওয়া হয়েছে এখনো স্পষ্ট নয়। আমরা চিকিৎসাধীন একজনের বক্তব্য নিয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সর্বশেষ খবর