বুধবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

দিনাজপুরে সেচ সমস্যার সমাধান

দিনাজপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুরে সেচ সমস্যার সমাধান

পুনর্ভবা নদীর পূর্বে দিনাজপুর সদর আর পশ্চিমে বিরল উপজেলা। নদীসংলগ্ন ৩৫টি গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষের বেশির ভাগই কৃষির ওপর নির্ভরশীল। যাতায়াত আর কৃষি জমিতে সেচের পানির সংকট ছিল তাদের প্রধান সমস্যা। কিন্তু ইতোমধ্যে সদর ও বিরল দুই উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা ও খরা মৌসুমে সম্পূরক সেচের লক্ষ্যে পুনর্ভবা নদীতে নির্মিত হয়েছে সমন্বিত পানি নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকলেও প্রকল্পটির সেতু স্থানীয় লোকজনের যাতায়াতে ভোগান্তি কমিয়েছে। এ প্রকল্পে গৌরীপুর, ঘুঘুডাঙ্গা ও বসন্তপুর এলাকায় সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে বোরো মৌসুমে সেচ সুবিধা প্রদান করছে। দিনাজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্পের সেচের পানি পেয়ে খুশি কৃষকরা। পুনর্ভবা নদীর ওপর নির্মিত গৌরীপুর, সমন্বিত পানি নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে বদলে যাচ্ছে এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা। এ প্রকল্পে পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে নদীর ১৩ কিলোমিটার পর্যন্ত শুষ্ক মৌসুমে সেচ সুবিধা পাবেন কৃষক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতায় ও হুইপ ইকবালুর রহিমের প্রচেষ্টায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে দিনাজপুর সদরের আস্করপুর ইউপির গৌরীপুর এলাকায় প্রকল্পটিতে নির্মাণে খরচ হয়েছে প্রায় ৬৩ কোটি টাকা। সেতু ও সমন্বিত পানি নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের দুই পাশে ছোট পরিসরে করা হয়েছে বিনোদন কেন্দ্র। নির্মাণ কাজ শেষে এখন আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষায়। এদিকে প্রকল্প এলাকার স্থানীয় সুবিধাভোগীরা জানান, পুনর্ভবা নদী পাড়ি দিতে দুই উপজেলার লোকজনদের নানা ভোগান্তিতে পড়তে হতো। কৃষক সময়মতো উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে পারতেন না। ভিন্ন পথে ১৬ কিলোমিটারেরও বেশি রাস্তা পাড়ি দিয়ে শহরে যেতে হতো। আবার শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পানি না থাকায় ফসল উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে তাদের। নদীর উভয় পাড়ে আলু, সরিষা, শিম, পিঁয়াজ, বেগুনসহ নানা ধরনের সবজির খেত। শুকনো মৌসুমে নদীর পানির স্তর নিচে নেমে যেত। তখন শত শত একর জমি অনাবাদি থাকত। গভীর নলকূপের মাধ্যমে খেতে সেচ দিতে কৃষকদের অনেক সমস্যায় পড়তে হতো। সমন্বিত পানি নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প হওয়ায় এখন সেই সমস্যার সমাধান হওয়ার পাশাপাশি মৎস্য চাষের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ অবকাঠামোর মাধ্যমে শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলে কৃষি ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে এনেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন বলে জানালেন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী দিনাজপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান।

তিনি জানান, প্রায় ৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে এখন আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষায়। নির্মিত এ প্রকল্পের মাধ্যমে পানির লেভেল ৪ মিটার বৃদ্ধির ফলে সেচ সুবিধার আওতায় এসেছে। যার প্রভাব পড়েছে পুনর্ভবা নদীর ১৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে এ প্রকল্পের মাধ্যমে দুই উপজেলার ৩৫টি গ্রামে ৩৬০০ হেক্টর জমিতে সেচ প্রদান করা যাবে। ইতোমধ্যে ১০০০ হেক্টর জমি সেচের আওতায় এসেছে। যার সুফল পাচ্ছেন কৃষক। এর বাইরেও মৎস্য চাষ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। অন্যদিকে সেচ কাজ পরিদর্শন করেন দিনাজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান, পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠাকুরগাঁওয়ের উপপ্রধান সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. রাফিউল বারী, দিনাজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী মো. সিদ্দিকুর নয়ন, সেচ সুবিধাভোগী পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. জিয়াউর রহমান জিয়া প্রমুখ।

 

সর্বশেষ খবর