শিরোনাম
শনিবার, ১৮ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

ঠিকাদারের হাতে প্রকৌশলী লাঞ্ছিত

নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরে বিএডিসির সহকারী প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত করার মামলায় অভিযুক্ত ঠিকাদার ও তার সঙ্গীদের ১০ দিনেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ বলছে, অভিযুক্তরা আত্মগোপনে থাকায় গ্রেফতার করা যায়নি। গত ৬ মার্চ নির্মাণকাজ অসম্পূর্ণ থাকায় বিল দিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করায় শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) নাটোর (ক্ষুদ্রসেচ) জোনের সহকারী প্রকৌশলী নাসিম আহমেদকে। সুমি কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী রওশন আলম মাহমুদ রাজু এবং তার অনুসারীরা মিলে দুপুরে ভুক্তভোগী সহকারী প্রকৌশলীর কক্ষে ঢুকে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। এ ঘটনায় রাজুসহ তিনজনকে অভিযুক্ত করে একই দিন রাতে নাটোর থানায় মামলা করেন।

 নাসিম আহমেদ।

 এদিকে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বিএডিসির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। অপরদিকে গত ১০ দিনে ঠিকাদার ও তার সঙ্গীদের গ্রেফতার না করায় নিন্দা, প্রতিবাদ এবং কাজের নিরাপত্তার জন্য দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন বিএডিসির কর্মকর্তারা। আহত প্রকৌশলী নাসিম আহমেদ বলেন, ৬ মার্চ দুপুরে ঠিকাদার রাজু এবং দুই অনুসারী তার অফিস ও রুমে প্রবেশ করে। এর পর রাজু ‘পাবনা-নাটোর-সিরাজগঞ্জ জেলায় ভূ-উপরিস্থ পানির মাধ্যমে সেচ উন্নয়ন প্রকল্পের’ আওতায় একটি স্কিমে চলমান ব্যারিড পাইপ লাইন নির্মাণ কাজের বিল দিতে বলেন এবং উচ্চ বাচ্চ্য করেন। কিন্তু কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী বিল দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং পুরো কাজ সম্পূর্ণ করে বিল দাখিল করতে বলেন। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে ঠিকাদার রাজু লাথি দিয়ে প্রকৌশলী নাসিমকে চেয়ার থেকে ফেলে দেন। এর পর রাজুর এক সহযোগী রুমের দরজা বন্ধ করে দেন এবং তিনজন মিলে এলোপাতাড়ি লাথি ও কিল ঘুষি দিতে থাকেন। নাসিমের আর্তচিৎকার শুনে তার দফতরের অন্য সহকর্মীরা দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করেন এবং নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই তিনি নিজে বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। কিন্তু গত ১০ দিনেও অভিযুক্ত গ্রেফতার না হওয়ায় তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। অপরদিকে এ অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদার রওশন আলম মাহমুদ রাজু বলেন, তিনি এক মাস আগেই কাজটি শেষ করে বিল উত্তোলনের জন্য কাগজপত্র দাখিল করেছেন। কিন্তু সহকারী প্রকৌশলী নাসিম আহমেদ বিল না দিয়ে টালবাহানা শুরু করেন। ঘটনার দিন তার সঙ্গে দেখা করলে তিনি ৩ পারসেন্ট উৎকোচ দাবি করেন। কিন্তু তিনি দিতে অস্বীকার করলে উভয়ের মধ্যে বাগবিতন্ডা হয়। কিন্তু কোনো রূপ লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটেনি। উল্টো অফিসের স্টাফরাই তাকে লাঞ্ছিত করেন। নাটোর বিএডিসির নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, তার অফিসে ঢুকে সহকারী প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এতে অফিসে কাজ করার ক্ষেত্রে সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘিœত হওয়াসহ নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছে। তিনি অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করেন। এ বিষয়ে বিএডিসির  অতিরিক্ত প্রধান প্রকৗশলী ও বিএডিসি প্রকৌশলী সমিতির সভাপতি প্রকৌশলী শিবেন্দ্র নারায়ণ গোপ বলেন, একজন কর্মকর্তার ওপর হামলার ১০ দিনেও আসামি গ্রেফতার না হওয়া দুঃখজনক। তিনি অভিযুক্ত ঠিকাদারকে গ্রেফতার এবং বিএডিসিসহ অন্যান্য সরকারী দফতরে কোনো কাজ করার সুযোগ না পায় সে ব্যাপারে ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান। এ বিষয়ে নাটোর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি নাসিম আহমেদ বলেন, অভিযুক্তদের বাড়ি পাবনা জেলায়। আমরা দুই দিন অভিযান চালিয়েও অভিযুক্তরা পলাতক থাকায় তাদের গ্রেফতার করতে পারিনি। তবে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর