বুধবার, ২২ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

জরাজীর্ণ ভবনে পাঠদান

আতঙ্কে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবক

মো. রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

জরাজীর্ণ ভবনে পাঠদান

দিনাজপুরের খানসামার কৌউগাঁও পাঠানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান। ছাদে দেখা দিয়েছে ফাটল। কোথাও খসে পড়েছে পলেস্তারা। বেরিয়ে গেছে রড। ঝুঁকিপূর্ণ এমন ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম চলায় আতঙ্কে রয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। সূত্র জানায়, ১৯৯১ সালে খানসামা উপজেলার ভাবকী ইউনিয়নের কৌউগাঁও গ্রামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৯৭-৯৮ অর্থ বছরে এলজিইডি ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয়ে চার কক্ষের একটি একতলা ভবন নির্মাণ করে। প্রায় এক যুগ ধরে ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়লেও সেখানেই ঝুঁকি নিয়ে চালছে পাঠদানসহ অফিসের কার্যক্রম। দিন দিন বাড়ছে ঝুঁকি। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এ আশঙ্কা করছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা। বিদ্যালয় ভবনের এ অবস্থায় দিন দিন কমছে শিক্ষার্থী। অভিভাবকরা তাদের ছেলে-মেয়েকে অন্যত্র ভর্তি করছেন। বর্তমানে বিদ্যালয়ের ৯২ জন ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষক আছেন ছয়জন। সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনের প্রতিটি পিলার, কক্ষের ছাদ ও বিমের প্লাস্টার খসে পড়েছে। মরিচা ধরা রডগুলো বের হয়ে আছে। অনেক স্থানে দেয়ালে ফাটল। শ্রেণিকক্ষে ছাদ থেকে প্রায়ই পলেস্তারা খসে পড়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর। বিদ্যালয় ভবনের এমন অবস্থার কারণে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী জামিলা খাতুন, মারুফ হোসেনসহ কয়েকজন জানান, জরাজীর্ণ ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পড়ালেখা করছি। অনেক সময় মা-বাবা বিদ্যালয়ে আসতে নিষেধ করেন। ভবন খুব নাজুক হওয়ায় এখন পাশের টিনশেডে ক্লাস করছি। এতে পড়ালেখার ক্ষতি হচ্ছে। টিনশেড ভবন রাস্তার পাশে হওয়ায় শব্দ দূষণের শিকার হচ্ছি। দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি। প্রধান শিক্ষক মহসিন আলী জানান, বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে ওই ভবনের অবস্থা খুবই নাজুক। ভবনটি ক্লাস নেওয়ার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যেকোনো মুহূর্তে ধ্বসে পড়তে পারে। ঝুঁকি নিয়ে কোনোভাবে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছি। পাশে একটি টিনশেড তৈরি করে তাতে ক্লাস নিতে হচ্ছে। শীত মৌসুমে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এখন গরমেও শিক্ষার্থীরা অতিষ্ঠ। কয়েকবার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে ভবন নির্মাণের জন্য লিখিত ও মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। দ্রুত ভবন নির্মাণ করা না হলে শিক্ষার্থী সংকট দেখা দেবে। বিদ্যালয় সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি। খানসামা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এরশাদুল হক চৌধুরী জানান, কৌউগাঁও পাঠানপাড়া সরকারি বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দিলেই টেন্ডার হয়ে নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর