কক্সবাজারের টেকনাফ থানার বৈদ্যঘোনা গভীর পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহৃত তিনজন ভিকটিম উদ্ধারসহ অপহরণকারী চক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছে র্যাব-১৫ এর সদস্যরা। কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর সহকারী পরিচালক (ল অ্যান্ড মিডিয়া) মো. শামসুল আলম খান গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, র্যাব-১৫, কক্সবাজারের জনৈক ঠান্ডা মিয়া (৬৫) অভিযোগ করেন, গত ২৫ মার্চ ভোরে তার ছেলে ভিকটিম-১। আমান উল্লাহ (১৯) ও তার ছেলের বন্ধু ২। সিরাজুল মোবিন (১৮)-সহ বসতবাড়ি থেকে ফজরের নামাজের উদ্দেশ্যে বের হলে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের উলুবুনিয়া রাস্তার মাথায় পৌঁছালে কতিপয় ব্যক্তি তাদের কাছ থেকে সিএনজি মেরামতের জন্য একটি গ্যারেজের সন্ধান চায়। পরবর্তীতে ভিকটিমদের সরল বিশ্বাসে পার্শ্ববর্তী একটি গ্যারেজের সন্ধান দেখানোর উদ্দেশ্যে গাড়িতে উঠলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে অপহরণকারী ভিকটিমদের অপহরণ করে পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে যায়। অপহরণকারীরা অপহৃত ভিকটিমদের একটি আবদ্ধ ঘরে শিকল দিয়ে বেঁধে তালাবদ্ধ করে রাখে এবং ১ নম্বর ভিকটিমের মোবাইল নম্বর থেকে তার পরিবারের কাছে ফোন করে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা দিতে ব্যর্থ হলে তাকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলার হুমকিসহ বিভিন্ন রকমের ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে। গত ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় র্যাব-১৫ এর টেকনাফ ক্যা¤ন্ডেপর একটি আভিযানিক দল টেকনাফ থানার আল জামিয়া আল ইসলামিয়া মাদরাসার সামনে অভিযান পরিচালনা করে অপহরণকারীর চক্রের মূলহোতা টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড মাঠপাড়ার নজির আহমেদের ছেলে নবী হোসেন (২৭) ও তার ভাই জাহিদ হোসেন প্রকাশ কাবিলাকে (২২) আটক করতে সক্ষম হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত ব্যক্তিদের অপহরণের কথা স্বীকার করে এবং তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই দিনে টেকনাফ থানাধীন বৈদ্যঘোনা (নতুন পল্লান পাড়ার) গভীর পাহাড়ি এলাকা থেকে আমান উল্লাহ (১৯) ও সিরাজুল মোবিনকে (১৮) উদ্ধার করা হয়। ওই অভিযান চলাকালীন গত ২৫ মার্চ বিকালে উখিয়া থানাধীন কুতুপালং এলাকা থেকে অপহৃত হওয়া অপর একজন ভিকটিম আবু তাহেরকে (২৭) উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়াও অপহরণকারীদের দখল থেকে ২টি রামদা, ২৫ ফুট শিকল, ৮টি তালা, ২টি চাবির ছড়াসহ ৩টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। উল্লেখ্য, এ ঘটনায় ১ নম্বর ভিকটিমের পরিবার বাদী হয়ে টেকনাফ মডেল থানায় মামলা করে। তিনি আরও জানান, উদ্ধারকৃত ভিকটিমদের স্ব-স্ব পরিবারের কাছে হস্তান্তরপূর্বক আটককৃত আসামিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।