মুন্সীগঞ্জে সড়ক নির্মাণকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি বাড়িঘর ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল ভোর ৫টা থেকে ৬টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা সদর উপজেলার চরাঞ্চলের আধারা ইউনিয়নের মিজিকান্দি গ্রামে দফায় দফায় হামলা, বিস্ফোরণ, বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় নারীসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে এক পক্ষের রানী বেগম (৩০), মাজেদা বেগম (৫০), মিষ্টি (১৮), ফরিদা বেগম (৩০) ও শিল্পী বেগম (৩৫)-কে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে এ ঘটনায় বাড়িতে পাল্টাপাল্টি হামলা ও ভাঙচুরের দাবি উভয় পক্ষের। সরেজমিন ঘুরে কয়েক দফা হামলা ও বাড়িঘর ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণের চিত্র দেখা গেছে। এ সময় উভয় পক্ষের বাড়িঘরের মধ্যে হাকিম আলী প্রধান ও জলিল প্রধানের বসতবাড়িতে ক্ষতিগ্রস্ত চিত্র দেখা গেছে। এ ছাড়াও একই পক্ষের জাহান আলী হালদারের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। অন্যদিকে অভিযুক্ত হামলাকারী শফিকুল মিজির ভাই সোহরাব মিজির বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ ও বসতঘর ভাঙচুরের চিত্র দেখা গেছে। বর্তমানে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। জানা গেছে, গ্রামের সড়ক নির্মাণে জমি দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতা শফিকুল মিজির সঙ্গে একই গ্রামের হাকিম আলী প্রধান ও জলিল প্রধানের বিরোধ চলছিল। বিরোধের সূত্র ধরে শুক্রবার বিকালে শফিকুল মিজির সঙ্গে হাকিম আলী প্রধানদের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উত্তেজনা দেখা দেয়। গতকাল ভোর ৫টার দিকে শফিকুল মিজির নেতৃত্বে হাকিম আলী প্রধানের বাড়িঘরে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় হামলাকারীরা হাকিম আলী ও জলিল প্রধানের বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়ে নগদ ৪ লাখ টাকা, এক ভরি স্বর্ণালংকার লুটে নেয় বলে অভিযোগ হাকিম আলী ও জলিল প্রধানদের। এ ছাড়াও হাকিম আলী প্রধান পক্ষের জাহান আলী হালদারের বাড়িতে ককটেল হামলা চালিয়ে নগদ ৬ লাখ টাকা, ১২ ভরি স্বর্ণালংকার লুটে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষ শফিকুল মিজির বিরুদ্ধে।
তবে একই সময় পাল্টা হামলায় ককটেল বিস্ফোরণ ও বাড়িঘর ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে হাকিম আলী প্রধান ও জলিল প্রধানের বিরুদ্ধে। শফিকুল মিজির চাচাতো ভাই সোহরাব মিজির বাড়িতে ককটেল হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে হাকিম আলী প্রধান ও জলিল প্রধান বলেন, গ্রামের সড়ক নির্মাণে জমি দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতা শফিকুল মিজির সঙ্গে বিরোধের সৃষ্টি হয়। সেই বিরোধকে কেন্দ্র করে গতকাল ভোরে আমাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট চালিয়ে নগদ ৪ লাখ টাকা ও এক ভরি স্বর্ণালংকার লুটে নেয়। এ সময় আমাদের আত্মীয় জাহান আলী হালদারের বাড়িঘরে ককটেল হামলা ও লুটপাট চালায় শফিকুল মিজির লোকেরা। বসতঘরে হামলা, নগদ টাকা লুটে নেওয়ার অভিযোগ এনে নুরু মিয়া হালদার বলেন, ভোরে হঠাৎ করে শফিকুল নিজের নেতৃত্বে আমাদের বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে আমার ছোট ভাই জাহান আলীর ঘরে থাকা নগদ ৬ লাখ টাকা ও ১২ ভরি স্বর্ণালংকার লুটে নেয়। তবে ককটেল হামলা, বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের বিষয়টি অস্বীকার করে বিএনপি নেতা শফিকুল মিজি বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তারা আমার বাড়িঘরে ককটেল হামলা চালিয়ে নিজেরা বাঁচার জন্য নিজেদের বাড়িঘর ভাঙচুর করে এখন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে আধারা ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত মুন্সীগঞ্জ সদর থানার এসআই মাঈনউদ্দিন জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। এখনো কোনো পক্ষই অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।